ইউরোপীয় কমিশনের নতুন প্রেসিডেন্ট উরসুলা

ইউরোপীয় কমিশনের নতুন মনোনীত প্রেসিডেন্ট জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ভন ডার লেন। ছবি: রয়টার্স
ইউরোপীয় কমিশনের নতুন মনোনীত প্রেসিডেন্ট জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ভন ডার লেন। ছবি: রয়টার্স

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইতিহাসে এই প্রথম একজন নারী ইউরোপীয় কমিশনের নতুন প্রেসিডেন্ট মনোনীত হয়েছেন। নতুন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ভন ডার লেন। এক সপ্তাহ ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পদ ইউরোপীয় কমিশনের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে দর-কষাকষি চলছিল। পরে প্রস্তাবিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নতুন প্রার্থী হিসেবে উরসুলা ভন ডার লেন মনোনীত হয়েছেন।

ইউরোপীয় কমিশনের দুই মেয়াদের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদে ইউঙ্কার অবসরে যাওয়ার কারণেই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। মঙ্গলবার রাতে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের সভায় ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট পদসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

জার্মানির ক্ষমতাসীন কোয়ালিশন সরকারের বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ভন ডার লেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের কাছের মানুষ বলে পরিচিত। ৬০ বছর বয়সী এই রাজনীতিক ২০১০ সাল থেকে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাট দলের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে তিনি নিদারসাক্সেন রাজ্যের পরিবারবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। পেশায় চিকিৎসক এবং সাত সন্তানের মা উরসুলা ভন ডার লেন চিকিৎসাবিদ্যায় অভিসন্দর্ভ করাসহ লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিকসে রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।

ইউরোপীয় কমিশনের নতুন প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের পাশাপাশি ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি মনোনীত হয়েছেন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান পদে মনোনীত হয়েছেন ফ্রান্সের ক্রিস্টিন লাগার্ড মারিও এবং পররাষ্ট্র, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষাবিষয়ক কমিশনার পদে মনোনীত হয়েছেন স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ বোরেলে।

মঙ্গলবার রাতে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের সভায় ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট পদসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে মনোনয়ন দেওয়া হলেও এসব মনোনয়নে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে তিনটি প্রধান প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলো হলো ইউরোপীয় পার্লামেন্ট, ইউরোপীয় কমিশন ও ইউরোপীয় কাউন্সিল। ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বা পার্লামেন্টের সদস্যরা মূলত জোটভুক্ত দেশগুলোর জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। ইউরোপীয় পার্লামেন্ট জোটের বিভিন্ন বিষয়ে আইনপ্রণেতা হিসেবে কাজ করে। জোটের বাজেটের ক্ষেত্রেও ইইউ পার্লামেন্টে সম্মতির প্রয়োজন হয়। ইউরোপীয় কমিশন জোটের প্রশাসনিক বিষয় এবং ইউরোপীয় কাউন্সিল সদস্য রাষ্ট্রের সরকারগুলোর প্রতিনিধি সংবলিত কমিটি। ইইউ পার্লামেন্টের সদস্যরাই তাঁদের পছন্দমতো ভোট দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্টসহ অন্য মনোনীত প্রার্থীদের নির্বাচিত করবেন।