৫০ কোটি টাকায় বিক্রি 'তুতেনখামেন'

প্রাচীন মিসরের বিখ্যাত ফারাও রাজাদের মধ্যে বংশের সবচেয়ে বিখ্যাত ধরা হয় তুতেনখামেনকে। মাত্র ৯ বছর বয়সে ‘ফারাও’ হয়েছিলেন তিনি। ১০ বছর সিংহাসনে থাকার পর মাত্র ১৯ বছর বয়সেই এই ‘বালক রাজা’ মারা যান। সেই খ্রিষ্টপূর্ব ১৪ শতকের প্রথমার্ধের কথা। এই তুতেনখামেনের মমিসহ সমাধি মিসরে আবিষ্কারের পরই ফারাওদের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয় বিশ্বের। এবার তুতেনখামেনের ৩ হাজার পুরোনো একটি ভাস্কর্য বিক্রি হয়েছে লন্ডনের একটি নিলামে, যা মিসর থেকে ‘চুরি হওয়া’ দাবি করে এই নিলামের বিরোধিতা করেছে মিসরের সরকার। 

নিলামে বিক্রি হওয়া ভাস্কর্যটি তুতেনখামেনের শুধু মাথার অংশের। এর উচ্চতা সাড়ে ২৮ সেন্টিমিটার (১১ ইঞ্চি)। ভাস্কর্যটি নিলামে তুলেছে ফরাসি মালিকানাধীন যুক্তরাজ্যভিত্তিক নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টিস। গত বৃহস্পতিবার এই ভাস্কর্য বিক্রি হয়েছে ৪৭ লাখ ৪৬ হাজার ২৫০ পাউন্ডে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৫০ কোটি টাকা। অথচ গত মাস থেকেই লন্ডনে নিযুক্ত মিসরের দূতাবাস এই নিলাম স্থগিত করার জন্য যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ক্রিস্টিসকে অনুরোধ জানিয়ে আসছিল। জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেসকোকেও নিলাম বন্ধের পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছিল মিসরের পুরাতত্ত্ব মন্ত্রণালয়। ১৯৮৫ সালের পর এই প্রথম মিসরীয় কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক ভাস্কর্য বিক্রি হলো প্রকাশ্যে।

মিসরের দাবি ছিল, ১৯৭০-এর দশকে মিসরের কারনাক মন্দির চত্বর থেকে তুতেনখামেনের ওই ভাস্কর্য চুরি হয়েছিল। বাদামি কোয়ার্টস পাথরে নির্মিত ভাস্কর্যটি মিসরের ভ্যালি অব দ্য কিংসে (রাজাদের উপত্যকা) আবিষ্কৃত হয়েছিল। রাজা তুত নামে তুতেনখামেনের ইতিহাস ইতিহাসবেত্তাদের নজর এড়িয়ে যেত, যদি না ১৯২২ সালে তৎকালীন ব্রিটেনের প্রত্নবিদ হাওয়ার্ড কার্টার তাঁর অবিকৃত মমিসহ সমাধি আবিষ্কার করতেন। ফারাও তুতেনখামেনকে বলা হয় ‘চিরতারুণ্যের প্রতীক’।