ভারতীয় 'গুপ্তচর' যাদবের মৃত্যুদণ্ড পর্যালোচনা করতে হবে: পাকিস্তানকে আইসিজে

কুলভূষণ যাদব।
কুলভূষণ যাদব।

অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় নৌ–কর্মকর্তা কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ডের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করতে হবে পাকিস্তানকে। বুধবার সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এ রায় দেন। কুলভূষণের কাছে ভারতীয় কনস্যুলার অফিসের প্রবেশাধিকারের অনুমতিও দিয়েছে আইসিজে।

আইসিজে তাদের রায়ে বলেছে, পাকিস্তান কার্যকরভাবে মৃত্যুদণ্ডের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা ও পুনর্বিবেচনা না করা পর্যন্ত কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত থাকা উচিত। কুলভূষণের কাছে ভারতীয় কনস্যুলারের প্রবেশাধিকারে বাধা দিয়ে পাকিস্তান ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে বলেও মনে করে আইসিজে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুপ্তচরবৃত্তি ও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ভারতের নাগরিক কুলভূষণ যাদবকে (৪৯) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন পাকিস্তানের একটি সামরিক আদালত। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শাল (এফজিসিএম) এ রায় দেন। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছিল, গোয়েন্দা অভিযান চালিয়ে বেলুচিস্তানের মাশকেল এলাকা থেকে ২০১৬ সালের ৩ মার্চ কুলভূষণ যাদবকে গ্রেপ্তার করা হয়। কুলভূষণ ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) হয়ে কাজ করছিলেন বলেও দাবি করেছিল পাকিস্তান।

নেদারল্যান্ডসের হেগে জাতিসংঘের আদালতে বুধবার এ রায় পড়ে শোনান আইসিজের বিচারকেরা। আইসিজে বলেছে, কুলভূষণ যাদবের অধিকার সম্পর্কে তাঁকে জানানো উচিত ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু পাকিস্তান তা করেনি। জাতিসংঘের আদালত বলেছে, কুলভূষণ সুধীর যাদবের সঙ্গে দেখা করার, যোগাযোগ করার ও তাঁর জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অধিকার ভারতের আছে। ভারতকে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে পাকিস্তান।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ১৬ জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত এ আদালতের ১৫ জন বিচারকই ভারতের পক্ষে রায় দিয়েছেন। অপর বিচারক রায় দিয়েছেন পাকিস্তানের পক্ষে। পাকিস্তানের পক্ষে রায় দেওয়া বিচারক নিজেও জাতিগতভাবে পাকিস্তানের। এমনকি চীনের বিচারকও ভারতের পক্ষে রায় দিয়েছেন, যা ইসলামাবাদের জন্য আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আইসিজের এ রায়কে ‘পূর্ণাঙ্গ বিজয়’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, কুলভূষণ যাদবের কাছে কনস্যুলারের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে পাকিস্তানকে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। নিঃসন্দেহে এটি ভারতের জন্য বড় এক বিজয়।

কুলভূষণ যাদবকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার এক মাস পর পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে নিয়ে গিয়েছিল ভারত। পাকিস্তানের দাবি, ইরান থেকে অবৈধভাবে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছিলেন কুলভূষণ। তবে ভারতের দাবি ছিল, নৌবাহিনী থেকে অবসরের পর ব্যবসায়ী বনে যাওয়া কুলভূষণকে ইরান থেকে অপহরণ করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন: