দাসত্বের শিকার চার কোটি

দাসত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ফাইল ছবি
দাসত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ফাইল ছবি

বিশ্বে আধুনিক দাসত্ব অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আগামী এক দশক ধরে প্রতিদিন ১০ হাজার মানুষকে এই দাসত্ব থেকে মুক্ত করা প্রয়োজন। গতকাল বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন কথাই বলা হয়েছে। দাসত্ববিরোধী অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক সংগঠন ওয়াক ফ্রি ফাউন্ডেশন এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে অর্ধেকের কম দেশ জোরপূর্বক শ্রমকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। অধিকাংশ দেশ জোর করে বিয়ে দেওয়াকে অপরাধ হিসেবে মানে না। বিশ্বে বর্তমান আধুনিক দাসত্বের শিকার ৪ কোটির বেশি মানুষ। তাদের অনেককে জোর করে শ্রম ও বিয়ের পিঁড়িতে বসাতে বাধ্য করা হচ্ছে। 

আধুনিক দাসত্বের অবসানে চার বছর আগে জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলোর সর্বসম্মতিক্রমে একটি বৈশ্বিক লক্ষ্য নির্ধারিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে আধুনিক দাসত্বব্যবস্থার সমাপ্তি ঘটানো। কিন্তু নতুন প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আধুনিক দাসত্বের হার বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে, তাতে ওই লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব। নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য আগামী এক দশকে প্রতিদিন ১০ হাজারের মতো মানুষকে মুক্ত করা প্রয়োজন আধুনিক দাসত্বব্যবস্থা থেকে।

ওয়াক ফ্রি ফাউন্ডেশনের গবেষণা ব্যবস্থাপক ক্যাথারিন ব্রায়ান্ট বলেন, ‘বর্তমান অবস্থায় ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা আধুনিক দাসত্বের অবসান ঘটাতে সক্ষম হব না।’ এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে ১৮৩ দেশের কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, আধুনিক দাসত্বের সবচেয়ে বড় শিকার উত্তর কোরিয়া ও ইরিত্রার নাগরিকেরা। সেখানকার সরকার নিজেদের জনগণকে কঠোর শ্রমে বাধ্য করায়। লিবিয়া, ইরান, গিনি, বুরুন্ডি, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো, রাশিয়া, সোমালিয়া সরকার আধুনিক দাসত্ব অবসানের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। কাতার, সিঙ্গাপুর, কুয়েত, ব্রুনেই, হংকং ও রাশিয়ার মতো ধনী দেশগুলো এই বিষয়ে খুব কমই পদক্ষেপ নিয়েছে। দাসত্বের অবসানের জন্য কিছু দেশ আগের চেয়ে নিজেদের প্রচেষ্টা কমিয়ে দিয়েছে। বিশ্বে প্রায় ১০০টি দেশ জোরপূর্বক শ্রমকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে না। তবে সম্পদ সীমিত সত্ত্বেও জর্জিয়া, নাইজেরিয়া, ইউক্রেন, মলদোভা, ইথিওপিয়া ও মোজাম্বিক আধুনিক দাসত্ব অবসানে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।