সৌদির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর আহ্বান

সৌদি আরব হজকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে। আসন্ন হজ মৌসুমে আকাশপথ ও কাতারের সঙ্গে থাকা স্থলপথ খুলে দেওয়ার জন্য সৌদি আরবকে চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকার ও ধর্মীয় সংস্থাগুলো। সম্প্রতি একটি গোলটেবিল আলোচনায় তারা এই আহ্বান জানায়।

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের অংশ হিসেবে দোহা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে ‘অবরোধের প্রভাব: কাতারের নাগরিক ও বাসিন্দাদের হজ ও ওমরাহ পালনে বাধা’ শীর্ষক এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে আওকাফ ও ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয়, কাতারের জাতীয় মানবাধিকার কমিটি (এনএইচআরসি), কাতার হজ কমিটি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

গোলটেবিল বৈঠকে আলোচকেরা ধর্মের রাজনীতিকীকরণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষত হজ ও ওমরাহ পালনের ক্ষেত্রে কাতারের নাগরিক ও বাসিন্দাদের সঙ্গে যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে, তার নিন্দা জানান আলোচকেরা।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, ধর্মীয় স্বাধীনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার। সৌদি আরব কর্তৃক মুসলমানদের এই অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সোচ্চার হওয়া। কাতারের নাগরিক ও বাসিন্দারা যাতে হজ ও ওমরাহ পালন করতে পারে, সে বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষকে চাপ প্রয়োগ করা উচিত।

দোহা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে আয়োজিত এ গোলটেবিল বৈঠক বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রায় একই সময়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ। ১৬ থেকে ১৮ জুলাই অনুষ্ঠিত ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক দ্বিতীয় এ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা, কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতা, সুশীল সমাজ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সবাই সারা বিশ্বে ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্বের ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে ধর্মীয় বৈষম্য রোধে এবং ধর্মের কারণে কোনো ধরনের হত্যা মোকাবিলায় সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তাঁরা।

ওই সভার চলাকালেই দোহায় এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়, যার মূল বিষয় ছিল কাতারের নাগরিক ও বাসিন্দাদের হজব্রত পালনে সৌদি কর্তৃপক্ষ সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা ও তার নিরসন। এতে বলা হয়, সৌদি আরবের একচেটিয়া পদক্ষেপের কারণে কাতারের নাগরিক ও বাসিন্দারা টানা তিন বছর ধরে হজ ও ওমরাহ পালনে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন। এই বৈঠক থেকে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি বার্তা পাঠানো হয় ওয়াশিংটনের আন্তঃধর্মীয় সংলাপে অংশ নেওয়া নেতৃবৃন্দের প্রতি।