অবশেষে ইরানের সঙ্গে বসল পাঁচ বিশ্বশক্তি

ইরানের সঙ্গে ছয় জাতি পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসেছেন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য পাঁচ দেশের নেতৃবৃন্দ। ছবি: রয়টার্স
ইরানের সঙ্গে ছয় জাতি পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসেছেন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য পাঁচ দেশের নেতৃবৃন্দ। ছবি: রয়টার্স

ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে দাঁড়ানোর প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনে অবশেষে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে চুক্তিতে থাকা অন্য পাঁচ দেশ। আজ রোববার অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে এই আলোচনা শুরু করেছে।

২০১৫ সালে হওয়া ছয় জাতি পরমাণু চুক্তি থেকে গত বছরের মে মাসে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে ইরানের ওপর আরোপ করে নিষেধাজ্ঞা। চুক্তিতে থাকা অন্য দেশগুলোকে এ ক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছিল ইরান। কিন্তু এই দেশগুলো ‘যুক্তরাষ্ট্র ঠিক করছে না’—এমন বক্তব্য দেওয়া ছাড়া এ নিয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এদিকে হরমুজ প্রণালিতে গেল মাসে পরপর কয়েকটি তেলবাহী ট্যাংকারে বোমা হামলার ঘটনায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় পরমাণু কর্মসূচি ফের শুরুর কথা জানায় তেহরান। এ অবস্থায় শেষ পর্যন্ত চুক্তিতে থাকা যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও রাশিয়া আজ ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল ইউরোপ। কিন্তু এসব পদক্ষেপ তেমন কোনো ফল দিতে পারেনি। চলতি মাসের শুরুর দিকে চুক্তি থেকে সরে গিয়ে পরমাণু কর্মসূচি ফের শুরুর ঘোষণা দেয় তেহরান। তবে একই সঙ্গে ইরান জানিয়ে দেয় যে, চুক্তির অন্য পক্ষগুলো ঠিকভাবে কাজ করলে তাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

গত মে মাসে নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ইরান বলেছিল, এ ধরনের পদক্ষেপ পরমাণু চুক্তির ভিত্তিকে নষ্ট করছে। চুক্তি অনুযায়ী পরমাণু কর্মসূচি সীমিতকরণের বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি লঙ্ঘনের পর ইরানও ঘোষণা দিয়ে চুক্তির বিধি ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালু করে। এরই মধ্যে চুক্তি ভঙ্গ করে তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে বলে জানিয়েছে এ সম্পর্কিত জাতিসংঘের সংস্থা। এ অবস্থায় জরুরি বৈঠকে বসেছে যুক্তরাষ্ট্র ব্যতীত চুক্তিতে থাকা অন্য দেশগুলো।

বৈঠকে ইরানের অর্থনীতি রক্ষায় চুক্তির অন্য পক্ষগুলো যেন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়, সে বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন ইরানের এক কূটনীতিক।
তবে এ বৈঠকের আয়োজন স্বাভাবিকভাবে ঘটেনি। গত ১৯ জুলাই ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড ব্রিটিশ একটি জাহাজকে আটক করে। এর প্রত্যুত্তরে জিব্রাল্টারে ব্রিটিশ বাহিনীও ইরানের একটি জাহাজকে আটক করে। এ ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা সব পক্ষের জন্যই মহাসংকট তৈরি করতে পারে—এমন আশঙ্কা থেকেই আলোচনাকে আর দূরে রাখা সম্ভব হয়নি।