২৭ জুলাই থেকে কাশ্মীরে যা ঘটেছে

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর বিক্ষোভ। গতকাল নয়াদিল্লিতে।  ছবি: রয়টার্স
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর বিক্ষোভ। গতকাল নয়াদিল্লিতে। ছবি: রয়টার্স

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হয়েছে গতকাল সোমবার। তবে এর আগে থেকেই ক্রমান্বয়ে এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। একনজরে সেই ঘটনাপ্রবাহ:

৫ আগস্ট, ২০১৯

কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দানকারী সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল।

৪ আগস্ট, ২০১৯

কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে রোববার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এর আগে বন্ধ করা হয় কাশ্মীর উপত্যকার সব জেলার মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা। ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের সহসভাপতি ওমর আবদুল্লাহ, পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) সভাপতি মেহবুবা মুফতিকে গৃহবন্দী করা হয়। কংগ্রেসের নেতা উসমা মজিদ ও সিপিআই(এম) নেতা এম ওয়াই তারিগামী দাবি করেছেন, তাঁদের আটক করা হয়েছে।

পুলিশের একাধিক সূত্র বলেছে, কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কাছে স্যাটেলাইট ফোন ও বিশেষ মুঠোফোন সেট সরবরাহ করা হয়েছে। লাদাখের কারগিল এবং কাশ্মীরজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি। ন্যাশনাল কনফারেন্সের (এনসি) সভাপতি ফারুক আবদুল্লাহ শ্রীনগরে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেন। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল না করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আহ্বান জানান ফারুক আবদুল্লাহ।

৩ আগস্ট, ২০১৯

কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের (এনসি) সহসভাপতি ওমর আবদুল্লাহ বলেন, রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন যে সংবিধানের ৩৫ (ক) ধারা বাতিলের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিধানকারী এই ধারা যাতে বাতিল করা না হয় সে জন্য পিডিপির প্রধান মেহবুবা মুফতি কেন্দ্রকে সতর্ক করার এক দিন পর ওমর আবদুল্লাহর ওই ঘোষণা আসে।

ভারতের সেনাবাহিনী জানায়, সীমান্তরেখা পার হয়ে জম্মু-কাশ্মীরের তল্লাশিচৌকিতে হামলার চেষ্টা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। পাল্টা গুলিতে নিহত হন পাকিস্তান বর্ডার অ্যাকশন টিমের সাত সদস্য। শান্তি বিনষ্টের চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে ভারতের সেনাবাহিনী আরও জানায়, সোপিয়ান ও সোপোরে বন্দুকযুদ্ধে জইশ-ই-মুহাম্মদের চার জঙ্গি নিহত হয়েছেন।

২ আগস্ট, ২০১৯

কেন্দ্রের কাছে খবর এসেছিল, পাকিস্তানের মদদে অমরনাথযাত্রার ওপর হামলার ছক কষছে জঙ্গিরা। হামলার আশঙ্কায় অমরনাথযাত্রার তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের জম্মু-কাশ্মীর থেকে দ্রুত সরে যেতে বলা হয়। ভারতের সেনাবাহিনী দাবি করে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও জঙ্গিরা সহিংসতা ছড়ানোর পরিকল্পনা করছে। 

১ আগস্ট, ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক ও ওমর আবদুল্লা। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ৩৫এ ধারা বাতিল করে দিলে গোটা উপত্যকায় তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে। সেদিন জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত ২৫ হাজার সদস্য মোতায়েনের নির্দেশ আসে। সেদিনই ১০ হাজার বাড়তি সেনা কাশ্মীরে পাঠানো হয়।

৩০ জুলাই, ২০১৯

রাজ্যের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক এক বিবৃতিতে রাজ্যের মানুষকে গুজবে কান না দিতে অনুরোধ করেন।

২৯ জুলাই, ২০১৯

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের পক্ষ থেকে রাজ্যের সব মসজিদ ও সেগুলোর পরিচালনা কমিটি সম্পর্কে প্রতিবেদন চাওয়া হয়। সেদিন থেকেই রটে যায়, কেন্দ্র ৩৭০ ও ৩৫ (ক) ধারা বাতিল করার পথে এগোচ্ছে।

২৮ জুলাই, ২০১৯

রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হলে তা দেশের জন্য অমঙ্গলকর হবে।

২৭ জুলাই, ২০১৯

১০০ কোম্পানি সশস্ত্র বাহিনী উপত্যকায় পাঠানো হয়।