গ্রিনল্যান্ডে এক দিনে গলল ১১ বিলিয়ন টন বরফ

উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, উত্তর পূর্ব গ্রিনল্যান্ডের সাদা বরফস্তরের ওপর নীল বিন্দু, যা আসলে বরফ গলে তৈরি হওয়া জলাশয়ের মতো স্থান। ছবি: সংগৃহীত
উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, উত্তর পূর্ব গ্রিনল্যান্ডের সাদা বরফস্তরের ওপর নীল বিন্দু, যা আসলে বরফ গলে তৈরি হওয়া জলাশয়ের মতো স্থান। ছবি: সংগৃহীত

দিনকে দিন বাড়ছে তাপমাত্রার পারদ। এর ফলে বিশ্বে দেখা দিয়েছে উষ্ণায়ণ। বরফ গলছে মেরু প্রদেশে। সবচেয়ে ভয়ংকর অবস্থা গ্রিনল্যান্ডে। সেখানে এক দিনেই বরফ খণ্ড গলেছে ১ হাজার ১০০ কোটি টন (১১ বিলিয়ন)। বরফ গলে পানি হয়ে যাওয়ার এ খবরে আতঙ্কিত বিজ্ঞানীরা। গলে যাওয়া বরফের পরিমাণ অলিম্পিকের ৪৪ লাখ সুইমিং পুলের সমান।

গ্রিনল্যান্ডে অবশ্য বরফ গলার ঘটনা আশ্চর্যের কিছু নয়। সাধারণত গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলে গ্রীষ্মেই। এ বছর বরফ গলতে শুরু করেছে একটু আগেই। চার মাস ধরে সেখানে বরফ গলছে।

মেরু প্রদেশ নিয়ে গবেষণা করা ডেনমার্কের ওয়েবসাইট ‘পোলার পোর্টাল’ এবং ‘ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টার’-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক সপ্তাহ (জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ) ধরেই গ্রিনল্যান্ডের বরফ অতিরিক্ত হারে গলেছে। এর মধ্যে গত ৩১ জুলাই বরফস্তরের উপরিভাগের ৬০ শতাংশ গলে গেছে। এতে প্রায় ১১ বিলিয়ন টন বরফ সুমেরু মহাসাগরে মিশে গেছে। ২০১২ সালের পর এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হারে বরফের গলে যাওয়া। তাপমাত্রার পারদ যদি এর মধ্যে না নামে, তবে আরও বরফ গলে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

ডেনমার্কের আবহাওয়া ইনস্টিটিউটের জলবায়ু বিজ্ঞানী রুথ মোট্রাম জানিয়েছেন, গত জুলাই মাসে গ্রিনল্যান্ডের ১৯৭ বিলিয়ন টন হিমবাহ গলে পানিতে মিশে গেছে। এর ফলে মাত্র এক মাসে সমুদ্রের পানির বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ০.১ মিলিমিটার বা ০.০২ ইঞ্চি। এর পরিমাণ অলিম্পিকের ৮ কোটি সুইমিং পুলের সমান। তিনি বলেন, এ বছরে গড়ে মাসে ৬০ থেকে ৭০ বিলিয়ন টন বরফ গলেছে।

দিনকে দিন বাড়ছে তাপমাত্রার পারদ। এর ফলে বিশ্বে দেখা দিয়েছে উষ্ণায়ন। বরফ গলছে মেরু প্রদেশে। সবচেয়ে ভয়ংকর অবস্থা গ্রিনল্যান্ডে।
দিনকে দিন বাড়ছে তাপমাত্রার পারদ। এর ফলে বিশ্বে দেখা দিয়েছে উষ্ণায়ন। বরফ গলছে মেরু প্রদেশে। সবচেয়ে ভয়ংকর অবস্থা গ্রিনল্যান্ডে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ১৯৫৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বরফ গলেছে চলতি বছরেই। তাপমাত্রা রেকর্ড ভেঙে গেছে। গ্রীষ্মে বরফ গলে পানিতে পরিণত হয়েছে। 

উপগ্রহ চিত্রে উত্তর–পূর্ব গ্রিনল্যান্ডের সাদা বরফস্তরের ওপর নীল বিন্দু দেখা গেছে। এগুলো আসলে বরফ গলে তৈরি হওয়া জলাশয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এভাবে সমুদ্রে পানিস্তর বাড়ার ফলেই সামুদ্রিক ঝড় এত বেশি হচ্ছে আজকের পৃথিবীতে। ইউরোপে তাপপ্রবাহের জেরে গত এক সপ্তাহে (জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ) গ্রিনল্যান্ডে অতিরিক্ত উচ্চ চাপ বলয় তৈরি হয়েছে। তার ফলেই সেখানের বরফস্তর গলে যাচ্ছে। তথ্যসূত্র: সিএনএন, ওয়াশিংটন পোস্ট