কাশ্মীরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৬, আহত শতাধিক

শ্রীনগরের সড়কে ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যের সশস্ত্র অবস্থান। শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত, ৫ আগস্ট। ছবি: এএফপি
শ্রীনগরের সড়কে ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যের সশস্ত্র অবস্থান। শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত, ৫ আগস্ট। ছবি: এএফপি

কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিলের চেষ্টার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। গতকাল বুধবার পাকিস্তানের জিও টিভি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশের ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ডুবে মারা যান। কাশ্মীরজুড়ে চলছে গণগ্রেপ্তার।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পুলিশের ধাওয়া খেয়ে এক তরুণ ঝিলাম নদীতে ঝাঁপ দেন। পরে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জিও টিভি জানায়, শ্রীনগর, পুলওয়ামা, বারমুল্লাসহ বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নামা বিক্ষোভকারীদের ওপর ভারতীয় সেনাবাহিনী গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে।

উপত্যকার সমস্ত যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ। বাইরের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করার কোনো উপায় নেই ভেতরের মানুষের। শহর ও গ্রামগুলোর আশপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেখা গেছে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পুরো অঞ্চলে টিভি চ্যানেল, ফোন সংযোগ এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

৫ আগস্ট ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ করে কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা’ বাতিল করা হয়। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারায় জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। পররাষ্ট্র, যোগাযোগ ও প্রতিরক্ষা ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ওই রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল। তাদের আলাদা পতাকা ছিল। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আলাদা সংবিধান ছিল। কালে কালে সব হারিয়ে অবশিষ্ট ছিল সাংবিধানিক ধারা ও কিছু বিশেষ ক্ষমতা। এবার সেটাও নিয়ে নেওয়া হলো। সরকারি প্রস্তাব বিল আকারে পেশও করা হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে রয়টার্স ও বিবিসি জানায়, এ ঘটনায় শোকে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছে পুরো জনগোষ্ঠী।

নিউইয়র্ক টাইমস এই মুহূর্তে কাশ্মীরকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

পিটিআইকে সরকারি কর্মকর্তারা জানান, ওই দিনের পর থেকে এখন পর্যন্ত কাশ্মীরে রাজনৈতিক নেতা, বিক্ষোভকারীসহ ১০০ জনের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে।