দ্বিখণ্ডিত কাশ্মীর কার্যকর হবে সরদার প্যাটেলের জন্মদিবসে

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য সরদার প্যাটেলের মূর্তি। ছবি: রয়টার্স
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য সরদার প্যাটেলের মূর্তি। ছবি: রয়টার্স

ভারতের দ্বিখণ্ডিত জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে কার্যকর হবে ৩১ অক্টোবর থেকে। সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৪৪তম জন্মবার্ষিকীর দিন থেকে এটি কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। জম্মু ও কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করার বিলটি এর মধ্যে দেশটির সংসদে পাস হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিলটিতে সই করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। 

এনডিটিভি অনলাইনের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন সরদার প্যাটেল। ভারতের জাতীয়তাবাদী এই নেতাকে ‘লৌহমানব’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। স্বাধীন ভারতের প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর সম্মাননায় গুজরাটে তাঁর জন্মস্থানে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য তৈরি করা হয় গত বছর। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঐক্যের মূর্তি’। ভাস্কর্যটি ৫৯৭ ফুট উঁচু, উচ্চতায় যা প্রায় ৬০ তলা ভবনের সমান। গুজরাট রাজ্যের সাদু বেট আইল্যান্ডে নর্মদা নদীর পাশে ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়েছে।

গত সোমবার ভারতের বিজেপি সরকার দেশটির সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করে। এতে জম্মু ও কাশ্মীর আলাদা রাজ্য না থেকে দ্বিখণ্ডিত হলো। জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখ এখন থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হবে। এই সিদ্ধান্তের পক্ষে গত বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, তাঁর সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এতে কাশ্মীরে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। সেখানে শিল্পায়ন, পর্যটন ও সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্রে প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অন্যান্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মতো হবে না। এখানে বিধানসভা থাকবে, নির্বাচন হবে, মুখ্যমন্ত্রী থাকবে, থাকবে মন্ত্রিসভাও। ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিলের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, এ অনুচ্ছেদ স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি। এই বিচ্ছিন্নতা ও সন্ত্রাসবাদের কারণে গত তিন দশকে কাশ্মীর অঞ্চলে ৪২ হাজার নিরীহ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে।

কাশ্মীর–সংক্রান্ত বিলটি প্রসঙ্গে এনডিটিভির খবরে বলা হয়, বিলটি প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের জন্য পাঠানোর আগে কিছু বিরোধী দলের ওয়াক আউটের মধ্যেও দিয়ে বিজেপি সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে এবং সরকারের প্রতি সমর্থন দেওয়া দলগুলোর সহায়তায় গত সপ্তাহে লোকসভায় পাস করে। এটি ইতিমধ্যে রাজ্যসভায়ও পাস হয়েছে।
সংসদে এ নিয়ে বিতর্কের সময় জওহরলাল নেহেরু এবং সরদার প্যাটেলের নাম উল্লেখ করা হয়। কংগ্রেস ও বিজেপি বিতর্কে জড়ায় যে এ দুজনের মধ্যে কে সংবিধানে ৩৭০ অনুচ্ছেদ এনেছিলেন।

সংসদে কাশ্মীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে থাকা দলগুলোর নেতৃত্ব দেয় কংগ্রেস। বিরোধিতা করা দলগুলোর মধ্যে রয়েছে সমাজবাদী পার্টি, ডিএমকে, লালু যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল এবং বাম দল। তাদের অভিযোগ, তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।