খাগড়াগড় বিস্ফোরণে জড়িত 'জেএমবির সদস্য' গ্রেপ্তার

জহিরুল শেখ
জহিরুল শেখ

পশ্চিমবঙ্গের চাঞ্চল্যকর খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডের আরেক অভিযুক্ত জহিরুল শেখ গ্রেপ্তার হয়েছেন ভারতের মধ্যপ্রদেশ থেকে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার সংবাদমাধ্যমে এ কথা বলা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত জহিরুল শেখ ছিলেন বিস্ফোরণের সময় ব্যবহৃত ন্যানো গাড়ির চালক। ঘটনার পর তদন্তে নেমে এনআইএ বাজেয়াপ্ত করেছিল ওই ন্যানো গাড়িটি। তবে ধরতে পারেনি চালক জহিরুলকে। জহিরুলের দায়িত্ব ছিল পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে তরুণ-তরুণীদের সংগঠনে নিয়োগ করা এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। বর্ধমানের শিমুলিয়া মাদ্রাসা থেকে তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে এনআইএ খুঁজছিল জহিরুলকে। এনআইএ এখন খতিয়ে দেখছে, আসছে ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসে কোনো নাশকতা করার ছক ছিল কি না। 


২০১৪ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে দুই জেএমবি জঙ্গির মৃত্যু হয়। এই ঘটনার তদন্তভার নেয় ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা—এনআইএ। এখন এই খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার বিচার চলছে কলকাতার বিশেষ নগর আদালতে। জহিরুলকে নিয়ে এখন পর্যন্ত ৩২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলো।

গত বছরের আগস্টে এনআইএ গ্রেপ্তার করে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কাওসার ওরফে বোমারু মিজানকে। বেঙ্গালুরুর রামনগর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই কাওসারকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্যও এনআইএ ১০ লাখ রুপি পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। ৩৮ বছর বয়সী এই কাওসার ছিলেন খাগড়াগড়-কাণ্ডের হোতা এবং জেএমবির শীর্ষ নেতা। তাঁর কাজ ছিল পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামে জেএমবির ঘাঁটি তৈরি করা। তিনি বুদ্ধগয়ার বিস্ফোরণ-কাণ্ডেও জড়িত ছিলেন।

কাওসার বা বোমারু মিজান ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালে প্রিজনভ্যানে হামলা চালিয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করে দুই জঙ্গিসহ পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও মারা যান বোমারু মিজানের দুই সঙ্গী। আর বোমারু মিজান এরপর চোরাইপথে ভারতে এসে আত্মগোপন করেন। তিনিও জড়িত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার বিস্ফোরণ-কাণ্ডে।

খাগড়াগড়ের যে ভাড়া বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে সেটির মালিক ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতা। ওই বিস্ফোরণে দুজন জেএমবি জঙ্গির মৃত্যু হয়। তারপরই প্রকাশ হয়ে পড়ে ওই বাড়িটি ছিল জেএমবির ঘাঁটি। ওখানেই তৈরি হতো গ্রেনেড, বোমা।

ওই বিস্ফোরণে তিনজন জখম হলেও একজনের অবস্থা গুরুতর ছিল। তার নাম আবদুল হাকিম। তাঁকে বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। নিহত দুই জঙ্গি হলেন শাকিল আহমেদ ও সুবহান মণ্ডল। দুজনের বাড়ি বাংলাদেশে বলে পুলিশ দাবি করেছিল। এই ঘটনায় নিহত শাকিল এবং আহত আবদুল হাকিমের স্ত্রী যথাক্রমে রাজিয়া বিবি এবং আলিমা বিবিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।