মাহাতসহ চার মাওবাদী নেতার যাবজ্জীবনের আদেশ খারিজ করে ১০ বছর কারাদণ্ড

কলকাতা হাইকোর্ট। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কলকাতা হাইকোর্ট। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলের মাওবাদী নেতা ছত্রধর মাহাতসহ চার মাওবাদী নেতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ খারিজ করে তাঁদের ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মুমতাজ খান ও বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এই আদেশের ফলে ছত্রধর মাহাতসহ চার মাওবাদী নেতা আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেতে পারেন। এই দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন সুখশান্তি বাস্কে, শম্ভু সরেন ও সগুন মুর্মু। একই সঙ্গে অন্য দুই মাওবাদী নেতা রাজা সরখেল ও প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সরকারপক্ষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

২০০৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মেদিনীপুরের কাটাপাহাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় সাত মাওবাদী নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে তাঁরা কারাগারেই ছিলেন। এর মধ্যে রঞ্জিত মুর্মু কারাগারেই মারা যান। বাকি ছয় আসামির মুক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ আদালত ওই রায় দেন।

বামফ্রন্ট সরকারের শাসনের শেষ দিকে পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলের মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা উত্তাল হয়ে ওঠে। সে সময় ছত্রধর মাহাতের নেতৃত্বে সেখানে গড়ে ওঠে ‘পুলিশ বিরোধী জনসাধারণের কমিটি’। এই কমিটি জঙ্গলমহলে বামফ্রন্ট সরকার বিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখে। সে সময় পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাওবাদীদের পাশে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দেন, তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে মাওবাদীদের দাবি মেনে নেবে এবং তাঁদের মুক্তি দেবে।

এই আশ্বাস পাওয়ার পর মাওবাদীরা মমতার দলকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে ২০১১ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা। এতে অবসান ঘটে বামফ্রন্টের ৩৪ বছরের শাসনামল। কিন্তু ক্ষমতায় এসে মমতা মাওবাদীদের কিছু দাবি মানলেও ছত্রধর মাহাতসহ বহু মাওবাদী নেতাকে মুক্তি দেননি। উল্টো ২০১৫ সালের মে মাসে মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা জজ মাহাতসহ সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ২০০৯ সাল থেকে তাঁরা প্রায় ১০ বছর ধরে কারাগারে আছেন। এবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ রদ করে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিলেন আদালত।