ক্ষুব্ধ উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চলছেই

গত জুলাই মাসের শেষ থেকে এ পর্যন্ত সপ্তমবারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া। ছবি: রয়টার্স।
গত জুলাই মাসের শেষ থেকে এ পর্যন্ত সপ্তমবারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া। ছবি: রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ায় ক্ষুব্ধ উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেই চলেছে। সবশেষ আজ শনিবারও দুটি স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া। এ নিয়ে গত জুলাই মাসের শেষ থেকে এ পর্যন্ত সপ্তমবারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল দেশটি।

দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর বরাতে আজ বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, আজ সকালে উত্তর কোরিয়া দুটি স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র জাপান সাগরে ছুড়েছে।

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় ১৭ মাসের বিরতি শেষে জুলাই মাসের শেষ থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত সাকটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করল দেশটি। সদ্য শেষ হওয়া যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে বারবার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে পিয়ংইয়ং।

মহড়া শেষে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ঘটনাকে ‘গুরুতর উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুসারে, দক্ষিণ হামগিয়ং প্রদেশের পূর্বের শহর সন্দোক থেকে ক্ষেপণাস্ত্র দুটি ছোড়া হয়। সেগুলো প্রায় ৩৮০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে জাপান সাগরে পড়ে।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফস (জেসিএস) এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের সামরিক বাহিনী পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে আরও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছে তারা।

জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাকেশি ইয়াওয়া নিশ্চিত করেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো জাপানের আঞ্চলিক জলসীমায় আসেনি। তবে এভাবে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপকে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া নিয়ে শুরু থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে উত্তর কোরিয়া। এই মহড়াকে ‘যুদ্ধের প্রস্তুতি’ উল্লেখ করে উত্তর কোরিয়া বলেছে, এ মহড়ার মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইনের সঙ্গে যে সমঝোতায় পৌঁছানো গিয়েছিল, তা লঙ্ঘন করা হয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার আপত্তির মুখে মহড়া বাতিল করতে অস্বীকৃতি জানালেও মহড়ার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনে দেশ দুটি।

আজ প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়াকে সামরিক উত্তেজনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার আবারও আলোচনা শুরু করতে তাদের ইচ্ছার কথা জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বছরের ব্যবধানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে তিনবার বৈঠকে বসেন। সবশেষ গত ৩০ জুন তাঁদের সাক্ষাৎ হয় দুই কোরিয়ার সীমান্ত এলাকা পানমুনজমের সামরিকমুক্ত অঞ্চলে। ওই সাক্ষাতে দুই নেতা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি পরিত্যাগের বিষয়ে স্থগিত আলোচনা আবারও শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।