মহাকাশ স্টেশনে ভিড়তে ব্যর্থ হলো রোবট নভোচারী

মানবাকৃতির এই রোবটটি নিয়েই যাত্রা শুরু করেছিল রুশ মহাকাশযান স্যুয়োজ এমএস-১৪। রোবটটির নাম ‘ফেডর’ (ফাইনাল এক্সপেরিমেন্টাল ডেমোনস্ট্রেশন অবজেক্ট রিসার্চ)। স্কাইবট এফ৮৫০ নামেও এটি পরিচিত। ছবি: এএফপি
মানবাকৃতির এই রোবটটি নিয়েই যাত্রা শুরু করেছিল রুশ মহাকাশযান স্যুয়োজ এমএস-১৪। রোবটটির নাম ‘ফেডর’ (ফাইনাল এক্সপেরিমেন্টাল ডেমোনস্ট্রেশন অবজেক্ট রিসার্চ)। স্কাইবট এফ৮৫০ নামেও এটি পরিচিত। ছবি: এএফপি

মানবাকৃতির রোবট নিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) উদ্দেশ্যে যাওয়া রুশ মহাকাশযান স্যুয়োজ এমএস-১৪ গতকাল শনিবার আইএসএসে ভিড়তে ব্যর্থ হয়েছে। নাসা টিভির বরাত দিয়ে রুশ সংবাদ সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের খবর, আইএসএস থেকে ১০০ মিটার দূরে এতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়। এ সময় রুশ মহাকাশ সংস্থা রসকসমসের দপ্তরে ঘটনার সরাসরি সম্প্রচারও বিঘ্নিত হয়। রোবটটির সঙ্গে কোনো মানুষ নেই। সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্যুয়োজ যানটি নিয়ে আইএসএসে প্রবেশ করবে, পরিকল্পনা এমনটিই ছিল। প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এটি আবার চেষ্টা করে স্টেশনে ভিড়তে। এ দফায়ও ব্যর্থ হয় যানটি। স্যুয়োজ যানে করে এর আগে রাশিয়া সব সময় মানুষ নভোচারীই পাঠিয়েছে মহাকাশে। তবে এবারই প্রথম দেশটি মহাকাশে রোবট নভোচারী পাঠাল।

যে রোবট স্যুয়োজ এমএস-১৪ যানটিতে রয়েছে, তার নাম ‘ফেডর’ (ফাইনাল এক্সপেরিমেন্টাল ডেমোনস্ট্রেশন অবজেক্ট রিসার্চ)। স্কাইবট এফ৮৫০ নামেও এটি পরিচিত। গত বৃহস্পতিবার এটি স্যুয়োজে করে কাজাখস্তানের বাইকোনর কসমোড্রোম রকেট উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে আইএসএসের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়। এর আগে ১০ দিন ধরে এটি প্রশিক্ষণ নেয়। মহাকাশ স্টেশনে নভোচারীদের জরুরি পরিস্থিতিতে কীভাবে সহায়তা করতে হবে, তাই মূলত শেখানো হয়েছে একে। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসাও ২০১১ সালে ‘রোবনট-২’ নামের এ রকম একটি রোবট পাঠিয়েছিল আইএসএসে।

রুপালি রঙের ফেডর রোবটটি ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি দীর্ঘ এবং ওজন ১৬০ কেজি। ফেডরের নিজস্ব ইনস্টাগ্রাম ও টুইটার অ্যাকাউন্টও রয়েছে। যেখানে সে পোস্টে লিখেছে, সে সম্প্রতি পানির বোতল খুলতে শিখেছে। এ রকম নতুন নতুন দক্ষতা খুব কম গ্র্যাভিটির পরিবেশে সে কাজে লাগাবে। উৎক্ষেপণের মুহূর্তে ফেডর স্যুয়োজ যানের পাইলটের আসনে বসা ছিল। তার হাতে ছিল একটি ছোট্ট রুশ পতাকা। এ সময় সে ‘চলো যাই, চলো যাই’ বারবার বলছিল। মহাকাশে প্রথমবার পাড়ি দেওয়ার সময় পৃথিবীর প্রথম নভোচারী ইউরি গ্যাগারিনের কণ্ঠে এই একই কথা শোনা গিয়েছিল।

গ্রিনিচ মান সময় শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইএসএসে ভেড়ার কথা ছিল। এখন দুই দফায় ব্যর্থতার পর সোমবার এটিকে আইএসএসে আবার ভেড়ানোর চেষ্টা করানো হবে। সফল হলে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এটি আইএসএসে অবস্থান করবে। রুশ সংবাদ সংস্থা রিয়া নভোস্তি জানিয়েছে, এটি বর্তমানে আইএএস থেকে ৯৬ মিটার দূরে অবস্থান করছে।