ভারতের জেএমবিপ্রধান ইজাজ গ্রেপ্তার

জেএমবির ভারতের প্রধান মো. ইজাজ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
জেএমবির ভারতের প্রধান মো. ইজাজ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ভারতের প্রধান মো. ইজাজ আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্কফোর্স (এসটিএফ) গত রোববার বিকেলে বিহারের গয়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

গোপন সূত্রে কলকাতা পুলিশ খবর পায়, ইজাজ গয়ার একটি বাড়িতে আত্মগোপন করে আছেন। এই খবর পেয়ে সেখানে যায় কলকাতার এসটিএফের একটি দল। তাঁরা গয়া পুলিশের সহায়তা নিয়ে রোববার বিকেলে গ্রেপ্তার করে ইজাজকে। তাঁর কাছ থেকে একটি স্যাটেলাইট ফোন, ল্যাপটপ, জিহাদি কাগজপত্র ও কিছু বৈদ্যুতিক সার্কিট উদ্ধার করা হয়েছে।

কলকাতা পুলিশের এসটিএফের যুগ্ম কমিশনার শুভংকর সিনহা জানিয়েছেন, ইজাজকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনা হচ্ছে।

কলকাতা পুলিশ জানায়, বাঙালি শ্রমিকদের সঙ্গে মিশে বেঙ্গালুরু ও কেরালা রাজ্যে বেশ কিছুদিন কাটান ইজাজ। সম্প্রতি তিনি বিহারের বুদ্ধগয়ায় এসে আত্মগোপন করে ছিলেন। ২০১৪ সালের অক্টোবরে খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ড ও ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বুদ্ধগয়ায় দালাই লামার সফর ঘিরে বিস্ফোরণকাণ্ডের অন্যতম হোতা এই ইজাজ।

কলকাতা পুলিশ বলছে, ইজাজ ২০০৮ সাল থেকে জেএমবির সদস্য। তিনি জেএমবির ভারত শাখার বর্তমান আমির বা প্রধানের দায়িত্বে আছেন। তাঁর দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামের বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় জেএমবির ঘাঁটি তৈরি করা।

ইজাজের আগে ভারতে জেএমবির প্রধান ছিলেন খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল হোতা কাওসার। সম্প্রতি কাওসার ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) হাতে গ্রেপ্তার হন। তারপর ভারতে জেএমবির প্রধান হন ইজাজ। ইজাজের সঙ্গে একসময় পরিচয় হয় কাওসারের। এরপরই ইজাজ ভিড়ে যান কাওসারের দল জেএমবিতে।

ইজাজের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায়। তিনি দরিদ্র ঘরের সন্তান। চার ভাইবোনের মধ্যে ইজাজ ছোট। স্থানীয় মাদ্রাসায় দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে তিনি চলে আসেন নদীয়ায়। সেখানকার মাদ্রাসায় পড়ার সময় তাঁর সন্ত্রাসবাদে হাতেখড়ি হয়। তাঁর আরও একটি নাম রয়েছে—শেখ ইউসুখ।

রোববার বিকেলে যখন ইজাজকে গয়ার গোপন আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়, তখন তিনি চোস্ত ইংরেজিতে কথা বলছিলেন। ইজাজ দাবি করছিলেন, তিনি একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ইজাজ নন। এরপরই এসটিএফের কর্মকর্তারা ভিডিও কল করেন এনআইএকে। ভিডিও কলে এনআইএ হাজির করে কাওসারকে। কাওসারই ইজাজকে চিনিয়ে দেন।

বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় ইজাজকে নিয়ে ৩২ জন গ্রেপ্তার হলেন। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার বিচার চলছে কলকাতায় এনআইএর বিশেষ নগর আদালতে। মামলায় ১৯ আসামি ২২ আগস্ট নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে বিচারকের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন।