হংকং বিক্ষোভের নেতা জোশুয়া গ্রেপ্তার

পাঁচ সপ্তাহ কারাভোগের পর জুন মাসে মুক্তি পেয়েছিলেন জোশুয়া অং। ছবি: রয়টার্স
পাঁচ সপ্তাহ কারাভোগের পর জুন মাসে মুক্তি পেয়েছিলেন জোশুয়া অং। ছবি: রয়টার্স

হংকংয়ে সরকারবিরোধী গণবিক্ষোভের অন্যতম নেতা জোশুয়া অংকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের আসন্ন বিক্ষোভের পরিকল্পনা সামনে রেখে জোশুয়াকে আজ শুক্রবার গ্রেপ্তার করল হংকং পুলিশ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, চীনের কাছে হস্তান্তরিত হওয়ার দুই যুগের বেশি সময়ের মধ্যে হংকং এখন সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে হংকংয়ে পূর্ণ গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনের সময়ের পরিচিত মুখ জোশুয়া। ওই সময় শহরটির অংশ বিশেষ ৭৯ দিন পর্যন্ত অচল হয়ে পড়েছিল। হংকংয়ে এখন আবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। এই বিক্ষোভ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আদালত অবমাননার দায়ে পাঁচ সপ্তাহ জেল খাটার পর জুনে মুক্ত পান জোশুয়া। ফের তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো।

হংকং পুলিশ আজ জোশুয়াসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গেছে।

জোশুয়ার রাজনৈতিক দল ডেমোসিস্তো তাদের টুইটারে জানিয়েছে, রাস্তায় হঠাৎ করে একটি গাড়িতে জোশুয়াকে ধাক্কা দিয়ে তোলা হয়। ওয়ান চাইয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের দিকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জোশুয়ার রাজনৈতিক দলের আইনজীবীরা বিষয়টি দেখছেন।

ডেমোসিস্তো হংকংয়ে পূর্ণ গণতন্ত্র চায়। দলটির আরেক সদস্য অ্যাগনেস চৌকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এই নারীর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি।

হংকংয়ের স্বাধীনতাপন্থী ন্যাশনাল পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ডি চ্যান গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাঁর ফেসবুক পেজে জানিয়েছেন, তাঁকে হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে। পুলিশ তাঁকে বলেছে যে, তিনি গ্রেপ্তার হতে যাচ্ছেন।

এই তিন ব্যক্তির গ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশের কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ৯০০ জনের বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে।

আসামি প্রত্যর্পণ বিল ঘিরে জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে হংকং। বিলটিতে বলা হয়, হংকংয়ে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিচারের জন্য চীন চাইলে নিজ ভূখণ্ডে নিয়ে যেতে পারবে। তবে বিক্ষোভের মুখে বিলটি স্থগিত করা হয়। এরপরও বিক্ষোভ শেষ হয়নি। গণতন্ত্রের জন্য নতুন নতুন দাবিতে বিক্ষোভ চলছে।

হংকংকে ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হস্তান্তর করে যুক্তরাজ্য। ওই সময় থেকে শহরটিতে ‘এক দেশ, দুই পদ্ধতি’ নীতি চলছে। চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা রয়েছে।

হংকংয়ে চলমান বিক্ষোভের ব্যাপারে চীন বিদেশি শক্তি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইন্ধন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে। হংকং আন্দোলনে নাক না গলাতে বিদেশি শক্তিগুলোকে সতর্ক করেছে চীন।

এ মাসের শুরুতে চীনপন্থী একটি সংবাদপত্রে জোশুয়া ও মার্কিন কনসুলার কর্মকর্তার বৈঠকের একটি ছবি প্রকাশিত হয়। পরে এ নিয়ে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাগ্যুদ্ধ শুরু হয়।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মরগ্যান ওরটাগাস একজন কূটনীতিকের ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের জন্য ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, চীনে ‘হিংস্র শাসনকাল’ চলছে।