ভারতে ২৭ ব্যাংক একীভূত হয়ে হবে ১২টি

ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। ছবি: এএফপি
ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। ছবি: এএফপি

ভারতের ২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক একীভূত হয়ে ১২টি ব্যাংকে পরিণত হচ্ছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ আজ শুক্রবার এ ঘোষণা দেন। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে আর্থিক জালিয়াতির বিষয়টি উঠে আসার পরদিনই এমন ঘোষণা দিলেন দেশটির অর্থমন্ত্রী।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে এখন থেকে ২৭টি নয়, বরং ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কার্যক্রম চালাবে। ভারতের অর্থনীতিকে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করতে ও একটি ‘শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা’ গড়ে তুলতেই নতুন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেন, ব্যাংকগুলোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সামগ্রিক কার্যক্রমের মূল্যায়ন করার জন্য একটি বিশেষ কমিটিও তৈরি করা হবে।

ভারতের অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ১ লাখ ২১ হাজার ৭৬ কোটি টাকার ঋণ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। নন পারফরমিং অ্যাসেট বা বাজে ঋণ হিসেবে পরিচিত ঋণের পরিমাণ ৮ দশমিক ৬৫ লাখ কোটি রুপি থেকে কমে ৭ দশমিক ৯০ লাখ কোটি রুপি হয়েছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক, ওরিয়েন্টাল ব্যাংক অব কমার্স ও ইউনাইটেড ব্যাংক একীভূত হয়ে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গঠিত হতে চলেছে। নতুন এই ব্যাংকটি পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ে আকারে প্রায় দেড় গুণ বড় হবে। ব্যাংকটির মূলধন হবে প্রায় ১৭ দশমিক ৯৫ লাখ কোটি রুপি।

এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ব্যাংক একীভূত হবে এলাহাবাদ ব্যাংকের সঙ্গে, কানাড়া ব্যাংকের একীভূতকরণ হবে সিন্ডিকেট ব্যাংকের সঙ্গে। আর ইউনিয়ন ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, অন্ধ্র ব্যাংক ও করপোরেশন ব্যাংক মিলে গঠিত হবে নতুন আরেকটি ব্যাংক।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সঠিক পদ্ধতিতেই এগোচ্ছে সরকার। কেআর চোকসে ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজার্স নামের একটি সংস্থার কর্মকর্তা দেবেন চোকসে এনডিটিভিকে বলেছেন, ‘এটি একটি বহুল প্রতীক্ষিত পদক্ষেপ। দেশের অর্থনীতির কার্যকারিতা বাড়াতে ও ব্যাংকের সংখ্যা সংকুচিত করতে এটি সঠিক পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ দেশের অর্থনীতির আকারকে আরও বড় করতেও সহায়ক হতে পারে।’

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশটির ব্যাংক খাতে জালিয়াতি বেড়েছে প্রায় ৭৪ শতাংশ। একেকটি জালিয়াতির ঘটনা টের পেতে ব্যাংকগুলোর গড়ে ২২ মাস করে সময় লেগেছে বলেও উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে।