এনআরসি নিয়ে আশা হারিয়ে ফেলেছি: আসামের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা

রয়টার্স ফাইল ছবি।
রয়টার্স ফাইল ছবি।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের প্রকৃত নাগরিকদের নামের তালিকা (এনআরসি) আজ শনিবার প্রকাশিত হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লাখের বেশি মানুষ। তবে রাজ্য থেকে বিদেশি নাগরিকদের তাড়ানোর ক্ষেত্রে এই তালিকা কোনো কাজ দেবে না বলে আগেই মন্তব্য করেছেন রাজ্যের গণপূর্ত, স্বাস্থ্য ও অর্থবিষয়ক মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। খবর এনডিটিভির।

গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের উদ্দেশে এই বিজেপি নেতা বলেছেন, ‘আমরা খসড়া তালিকার ঠিক পরেই এনআরসি নিয়ে আশা হারিয়ে ফেলেছি। এনআরসি কোনো বাংলাদেশিকে বহিষ্কারের জন্য কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল বা ফাইনাল নয়...কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। বিজেপি আমলে এমন অনেক ফাইনাল দেখতে পাবেন।’

বিশ্বশর্মা বলেন, আসামের নাগরিকদের জন্য এই তালিকাকে ‘রেড লেটার’ হিসেবে দেখা হবে না। বিজেপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা ইঙ্গিত দেন, এ তালিকায় তাঁর আস্থা কম। এ থেকে বিদেশিদের বের করা যাবে না।

হিমন্ত বিশ্বশর্মা আরও বলেছেন, তালিকাটি বৈধ বাসিন্দাদের চিহ্নিত করা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বাতিল করতে কতটা সমর্থ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তালিকা প্রকৃত অর্থেই বিদেশিদের হাত থেকে আসামকে কতটা মুক্তি পেতে সহায়তা করবে, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে তাঁর।

আসামের এনআরসি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। আজ স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় অনলাইনে তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকা প্রকাশের পর ১৯ লাখ ৬ হাজার মানুষের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল।

বিজেপিশাসিত এই রাজ্যের পুলিশ জানিয়েছে, এনআরসি তালিকা প্রকাশের পর কোনো রকম প্রতিবাদ বরদাশত করা হবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত ২০ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। মোট আড়াই হাজার এনআরসি সেবাকেন্দ্র আগলাতে শুরু করেছে নিরাপত্তারক্ষীরা। বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দিসহ স্পর্শকাতর ১৪ জেলার ওপর বিশেষ নজর রেখেছে প্রশাসন। এনআরসি ঘিরে গোটা রাজ্যের পরিবেশ থমথমে।

কেন্দ্র অবশ্য বলেছে, এনআরসির বাইরে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তি বিদেশি ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন এবং আবেদন করার সময়সীমা ৬০ থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১৯৫১ সালে আসামে প্রথম প্রকাশিত এনআরসিতেই হালনাগাদ করা হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুসারে রাজ্যটিতে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে যাঁরা পৃথকভাবে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে বাংলাদেশ থেকে এ রাজ্যে প্রবেশ করেছেন, তাঁদের আলাদা করা হচ্ছে।