বাসার জানালায় 'পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট' জাদুঘর

বাসার জানালায় সাজানো ছোট জাদুঘর। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
বাসার জানালায় সাজানো ছোট জাদুঘর। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

আর দশটা জাদুঘরের মতো এই জাদুঘরের কোনো প্রবেশদ্বার নেই। লাইন ধরে জাদুঘরে ঢোকার ঝামেলাও নেই। বরং বাইরে দাঁড়িয়েই গোটা জাদুঘর দেখে ফেলা যায়। জাদুঘরটির অবস্থান যে বাসার জানালায়!

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইজারল্যান্ডের বাসেল শহরের এই খুদে জাদুঘরটি দেশটির তো বটেই, সম্ভবত বিশ্বেরই ক্ষুদ্রতম জাদুঘর। স্থানীয় ভাষায় জাদুঘরটিকে বলা হয় ‘হুসেসাগ মিউজিয়াম’, ইংরেজিতে যার অর্থ দাঁড়ায় ‘প্যান্ট পকেট মিউজিয়াম’! মূলত আকৃতির কারণেই জাদুঘরটির এমন নামকরণ।

বাসেলের ওল্ড টাউন এলাকার প্রায় ৬০০ বছর পুরোনো একটি বাড়ির দুই ফুট বাই দুই ফুট জানালায় সাজানো হয়েছে এই জাদুঘরটি। সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য বাইরে থেকে দেওয়া হয়েছে লোহার গ্রিল। কয়েক মাস পরপরই জাদুঘরে যুক্ত হয় নতুন নতুন দর্শনীয় জিনিস।

খুদে এই জাদুঘরে আছে ‘আইফেল টাওয়ার’ও! ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
খুদে এই জাদুঘরে আছে ‘আইফেল টাওয়ার’ও! ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

জাদুঘরটির দেখাশোনা করছে স্থানীয় একটি পরিবার। বাড়িটিতে ৩৫ বছর ধরে বসবাস করছেন তাঁরা। আর জাদুঘরটি পরিচালনা করছেন ২৪ বছর ধরে। জাদুঘরের বেশির ভাগ জিনিসই তাঁদের নিজস্ব সংগ্রহ থেকে দিয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়া ব্যতিক্রমী জিনিস পেলে বাইরের মানুষের কাছ থেকেও জাদুঘরের জন্য জিনিস সংগ্রহ করেন তাঁরা।

জাদুঘরের প্রশাসনিক ব্যাপার দেখভাল করেন গৃহকর্ত্রী দাগমার, আর সৃজনশীল ব্যাপার দেখাশোনা করেন তাঁর স্বামী ম্যাথিয়াস। ম্যাথিয়াস বলেন, ‘আমি এই জাদুঘরের সৃজনশীল বিভাগের পরিচালক। আমার স্ত্রী প্রশাসনিক দিকটা সামলান। জাদুঘরে কী কী দেখানো হবে, সেটি আমার স্ত্রীই ঠিক করে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাদুঘরের প্রচারণা চালানো, বিশ্বের নানা প্রান্তের আগ্রহী মানুষের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া—এসব কাজও সে–ই করে। সে জিনিস বাছাই করে দেয়, এরপর আমার দায়িত্ব হলো সেগুলোকে জাদুঘরে ঠিকঠাকভাবে জায়গা করে দেওয়া।’

ছোট্ট এই জাদুঘরে কী নেই! পুরোনো হাতঘড়ি থেকে শুরু করে প্লাস্টিকের রোদচশমা, রুবিকস কিউব, খেলনা টেলিভিশন—সবকিছুই আছে জাদুঘরে। আর আছে দাগমারের সবচেয়ে প্রিয় জিনিস, বিভিন্ন আমলের রাজাদের ছোট মূর্তি। আছে প্যারিসের বিখ্যাত আইফেল টাওয়ারের আদলে গড়া একটি টাওয়ারও! আগ্রহ ছিল বলে ছোটবেলা থেকেই এসব জিনিস সংগ্রহ করতেন দাগমার। জমানো সেই জিনিসগুলো দিয়েই এখন তিনি খুলেছেন ছোট্ট এই জাদুঘর।