মাংসখেকো উদ্ভিদ ফিরেছে

মাংসখেকো উদ্ভিদ
মাংসখেকো উদ্ভিদ

গল্প বা সিনেমায় মানুষখেকো গাছের কথা প্রায়ই শোনা যায়। বাস্তবে এ রকম কোনো গাছ আছে কি না, তা নিশ্চিত নয়। তবে কল্পকাহিনির শরীর হিম করা মানুষখেকো গাছ নয়, মাংসখেকো উদ্ভিদের সন্ধান পাওয়া গেছে। সানডিউ বা সূর্যশিশির নামের ওই মাংসাশী উদ্ভিদ মিলেছে ইংল্যান্ডের একটি এলাকায়। উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা বলছেন, অনেক আগে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যেত সানডিউ। কিন্তু আর্দ্র ভূমি কমে যাওয়ার কারণে উদ্ভিদটি অনেক এলাকায় বিপন্ন হয়ে যায়। এখন উদ্ভিদটির পুনরুৎপাদনের চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।

সানডিউ দেখতে আকর্ষণীয় ও সুন্দর। এর কর্ষিকাগুলো (লম্বা শুঁড়জাতীয় অংশ) বিভিন্ন ধরনের পতঙ্গ আটকে ফেলে এবং ক্রমেই তা হজম করে নেয়। যুক্তরাজ্যে সানডিউয়ের মতো মাংসাশী প্রজাতির আরও উদ্ভিদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মাংসখেকো উদ্ভিদের বিষয়ে দারুণ আগ্রহ ছিল বিবর্তনবাদের জনক চার্লস ডারউইনের। নিজের বইয়ের জন্য এ রকম উদ্ভিদের চিত্রাঙ্কন ও পরীক্ষা–নিরীক্ষাও করেন। ইনসেক্টভোরাস প্ল্যান্ট (পতঙ্গখেকো উদ্ভিদ) নামে ডারউইনের বইটি প্রকাশিত হয় ১৮৭৬ সালে। বইয়ে উদ্ভিদটির বিষয়ে নিজের ভালোবাসা ও ভালো লাগার কথা তুলে ধরেন ডারউইন। তিনি বইয়ে মাংসখেকো উদ্ভিদটির নাম দেন দ্রোসেরা। এই দ্রোসেরাই পরে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিতি পায়।

ইংল্যান্ডের চেশায়ারের বাসিন্দা জশুয়া স্টাইল (২৪) সানডিউসহ বিরল সব উদ্ভিদ সংরক্ষণের জন্য গড়ে তুলেছেন নর্থ–ওয়েস্ট রেয়ার প্ল্যান্ট ইনিশিয়েটিভ নামের একটি সংগঠন। তিনি বলেন, এটা (সানডিউ) খুবই বিরল প্রজাতি। 

স্টাইল বলেন, ‘সানডিউ ইংল্যান্ডে বিপন্নের লাল তালিকায় রয়েছে। এটা ২০টির কম স্থানে জন্মায়। এখন বিরল হওয়ায় এটা আমাকে বেশ টানে। তাই আমি আবার এটা পুনরুৎপাদন করব।’

কোথায় জম্মে সানডিউ?

একসময় ইংল্যান্ডে পাওয়া যেত সানডিউ। কিন্তু কয়েক শতক ধরেই এটা ব্যাপকভাবে বিলীন হতে শুরু করে। আর্দ্র ভূমিতে এগুলো জন্মে থাকে সাধারণত। কিন্তু ভূমি ব্যবস্থাপনার পরিবর্তনের কারণে জলা ও আর্দ্র ভূমি শুষ্ক ভূমিতে পরিণত হয়। এ কারণে মাংসখেকো উদ্ভিদটি দ্রুত হারিয়ে যেতে থাকে। স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসে বেশি দেখা যেত এ উদ্ভিদ।