ইচ্ছেমতো ডাকার অধিকার আছে মোরগেরও

মোরগ মহিস।  ছবি: এএফপি
মোরগ মহিস। ছবি: এএফপি

দুই মাস আগে সংবাদ শিরোনাম হয়েছিল মহিস নামে ফ্রান্সের একটি মোরগ। প্রতিদিন ভোরে উচ্চ শব্দে ডেকে আশপাশের মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর অভিযোগ এনে মহিসের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিয়েছিলেন তাঁর এক প্রতিবেশী। সেই মামলায় জিতে গেছে মোরগটি। বিচারক বলেছেন, প্রতিটি পাখিরই দিনের বেলা ডাকার অধিকার রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন ফ্রান্সের পশ্চিমাঞ্চলীয় রশফোর্ট এলাকার একটি আদালত। মহিসের মালিক কোহিন ফেসুর আইনজীবী জুলিয়ান পাপিনু বলেন, মহিসের সহজাত অধিকারে হস্তক্ষেপ করায় মামলার বাদীকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তার মালিককে ১ হাজার ইউরো দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

মামলার শুনানির সময় কোহিন ফেসু আদালতকে বলেন, আটলান্টিক মহাসাগরের ছবির মতো সুন্দর দ্বীপ ওলেহোঁয় এর আগে মহিসের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেনি। অবসরে যাওয়া জ্যঁ-লুইস বিহঁ ও জোয়েল নামের এক দম্পতি সম্প্রতি অবকাশযাপনের জন্য তাঁর পাশের বাড়িটি কিনে নেন। তাঁরাই প্রথম অভিযোগ করেন।

কোহিন আদালতকে বলেন, তাঁর পোষা মোরগ মহিসকে চুপ রাখতে তিনি বেশ কয়েক দফায় চেষ্টা করেছেন। একবার তো মোরগটির খাঁচার চারপাশজুড়ে কালো আবরণ বসিয়ে দেন। তিনি ভেবেছিলেন, এতে মহিস হয়তো বুঝতেই পারবে না, ভোর হয়ে গেছে। কিন্তু সব চেষ্টাই বৃথা যায়। আদালত সূত্র বলেছে, মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার একটি পর্যায়ে আদালতের একজন কর্মকর্তা বাদীর বাড়িতে টানা তিন রাত অবস্থান করেন। মহিসের ডাকার সময় ও তার শব্দের মাত্রা নির্ণয়ে ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তিনি দেখতে পান, মোরগটি মোটেও ভোর চারটার সময় ডাকাডাকি শুরু করে না। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটার মধ্যে থেমে থেমে ডাকে এটি। প্রতিবেশীরা যদি ঘরের জানালা বন্ধ রাখেন, তাহলে সে ডাক শোনাই যায় না।

মহিসের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটি ফ্রান্সে আলোড়ন তোলে। ‘মহিসকে রক্ষা করো’ শীর্ষক এক অনলাইন পিটিশনে ১ লাখ ৪০ হাজার লোক স্বাক্ষর করেছিলেন। অনেকে মহিসের ছবিসংবলিত টি-শার্টও পরতে শুরু করেছেন, যাতে লেখা রয়েছে ‘আমাকে ডাকতে দাও’।