সৌদির তেল রক্ষায় সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আবকায়িকে আরামকো তেল শোধনাগারের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ। ছবি: রয়টার্স
আবকায়িকে আরামকো তেল শোধনাগারের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ। ছবি: রয়টার্স

সৌদি আরবের তেল স্থাপনাগুলো হামলা থেকে রক্ষার জন্য সেখানে সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপের সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা’ হিসেবে সৌদি আরবে মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে। তবে কত সেনা পাঠানো হবে, তা নিশ্চিত করেননি তিনি। এদিকে ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে কেন্দ্র করে নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গত শনিবার সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে হামলা চালানো হয়। আরামকোর সবচেয়ে বড় তেল পরিশোধনাগার আবকায়িক ও খুরাইস এলাকায় এ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। তবে কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি ও গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, ইরানই ওই হামলার জন্য দায়ী। সৌদি আরবও হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে। যদিও তেহরান ওই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ‘ইয়েমেনের জনগণ তাদের প্রতিরক্ষামূলক বৈধ অধিকার প্রয়োগ করছে।’

আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার সকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে ‘সর্বোচ্চ মাত্রার’ নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তিনি সামরিক সংঘাত এড়াতে চান বলে আভাস দিয়েছেন। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, শক্তিশালী মানুষের প্রকাশভঙ্গি এবং যেসব জিনিস শক্তিমত্তা প্রকাশ করে, তা কিছুটা সংযমের সঙ্গে দেখানো যায়।’
ট্রাম্প জানান, ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে কেন্দ্র করে নতুন নিষেধাজ্ঞা আসবে।

সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে গতকাল মার্ক এসপের বলেন, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এ সহায়তা চেয়েছে। মার্কিন সেনারা ক্ষেপণাস্ত্র ও আকাশ পথে হামলাগুলোর দিকে নজর রাখবেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল জোসেফ ডানফোর্ড জুনিয়র জানান, সেনা মোতায়েন হবে ‘মাঝারি’ ধরনের। এ সংখ্যা হাজারের বেশি হবে না।
এদিকে ‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, ইরানে সামরিক হামলার বিষয়টি এখনো বিবেচনাধীন।

হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবের জনবহুল এলাকাগুলোতে একের পর এক রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধে লিপ্ত। ২০১৫ সালের মার্চে ইয়েমেন-যুদ্ধ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। দেশটির প্রেসিডেন্ট হুতি বিদ্রোহীদের কারণে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। ইয়েমেনের প্রেসিডেন্টকে সমর্থন দিচ্ছে সৌদি আরব।

ইরান সৌদি আরবের আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয় এবং ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ নিয়ে এ বছর ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক চরম আকার ধারণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, জুন ও জুলাই মাসে উপসাগরীয় এলাকায় দুটি তেল ট্যাংকারে হামলা চালানোর ঘটনার পেছনে ইরানের হাত রয়েছে। তবে দুটি অভিযোগই অস্বীকার করেছে ইরান।