প্রত্যেক প্রকৃত ভারতীয়ই হিন্দু: মোহন ভাগবত

মোহন ভাগবত। ছবি: এএফপি
মোহন ভাগবত। ছবি: এএফপি

সংগঠন সম্পর্কে যাবতীয় ‘ভ্রান্ত ধারণা’ দূর করতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসলেন। আজ মঙ্গলবার রাজধানী দিল্লিতে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা ধরে এই মেলামেশায় আরএসএস প্রধান বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর যেমন দেন তেমনই বিভিন্ন বিষয়ে সংঘের ভূমিকা ও মনোভাব ব্যাখ্যা করেন। সংঘ প্রচারিত এক বিবৃতিতে এই কথা জানানো হয়েছে।

এই বৈঠকে ৫০টির বেশি বিদেশি প্রচারমাধ্যমের প্রায় ৮০ জন সাংবাদিক অংশ গ্রহণ করেন। বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী, এনআরসি প্রসঙ্গে মোহন ভাগবত বলেন, কাউকে বিতাড়িত করা এই কর্মকাণ্ডের লক্ষ্য নয়। উদ্দেশ্য, যাঁরা ভারতীয় নাগরিক নন তাঁদের চিহ্নিত করা।

এনআরসি নিয়ে মোহন ভাগবতকে বহু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। বিদেশিরা বিশেষ করে জানতে চান, যাঁরা অনাগরিক বলে চিহ্নিত হবেন তাঁদের নিয়ে কী করা হবে। মোহন ভাগবত জানান, সেটা সরকারই ঠিক করবে। তবে তিনি বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধন বিল তাঁরা সমর্থন করেন। কারণ, সারা পৃথিবীতে ভারত ছাড়া আর কোনো দেশ হিন্দুদের আশ্রয়স্থল নয়। নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে ভারতের শাসক দল বিজেপি চায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ‘অত্যাচারিত’ হয়ে চলে আসা ‘অ-মুসলমানদের’ এ দেশের নাগরিকত্ব দিতে।

সংঘ চালক গোরক্ষার নামে পিটিয়ে হত্যার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, সংঘের কেউ জড়িত থাকলে আইনের উচিত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া। সারা দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রচলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে সর্বসম্মত হওয়া দরকার।

বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে ভাগবতের এই খোলামেলা আলোচনার একটা প্রেক্ষাপট রয়েছে। গত জুলাই মাসের ১৭ তারিখে ভারতে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ওয়ালটার লিন্ডার মহারাষ্ট্রের নাগপুরে সংঘের সদর দপ্তরে গিয়ে মোহন ভাগবতের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। বহু বিদেশি প্রচারমাধ্যম সে সময় জার্মান রাষ্ট্রদূতকে সমালোচনা বিদ্ধ করেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এক ‘ফ্যাসিবাদী’ সংগঠনের প্রধানের কাছে গিয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূত ঠিক করেননি। ওই সমালোচনা দেখে আরএসএস বোঝে, তাঁদের সম্পর্কে বহু বিদেশির ধারণা ‘স্বচ্ছ’ নয়।

সেই অস্বচ্ছ ধারণা দূর করতেই মঙ্গলবারের মেলামেশার আয়োজন। নিজেদের কথা এবং বিভিন্ন বিষয়ে সংঘের অভিমত জানানোর পর সংঘ চালক বহু ধরনের প্রশ্নের সোজাসাপ্টা জবাবও দেন। জম্মু-কাশ্মীরের জন্য সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ সমর্থন করে তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের বাকি অংশের সঙ্গে কাশ্মীরকে একাত্ম হতে সাহায্য করবে। হিন্দুত্বের ব্যাখ্যাও তিনি দেন। বলেন, বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যই হলো হিন্দুত্ব। তিনি বলেন, সেই হিসেবে সংঘের চোখে প্রত্যেক প্রকৃত ভারতীয়ই ‘হিন্দু’।