পশ্চিমবঙ্গে প্লাস্টিক বর্জন হবে ধাপে ধাপে

কলকাতা পৌর করপোরেশন। ছবি: প্রথম আলো
কলকাতা পৌর করপোরেশন। ছবি: প্রথম আলো

ভারতে অক্টোবর মাস থেকে প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারের ওপর একেবারে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ভারত সরকার ঘোষণা দিয়েছে ২০২২ সাল নাগাদ ধাপে ধাপে উঠিয়ে ফেলা হবে প্লাস্টিক পণ্য।

দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব সি কে মিশ্র বলেছেন, এখনই একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে না।

বর্তমানে ভারতে ৩০ হাজার প্লাস্টিক পণ্য নির্মাণকারী সংস্থা রয়েছে। এ ছাড়া আরও ৩০ হাজার সংস্থা প্লাস্টিক প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত। এসব কারখানায় কাজ করে ৪০ লাখ মানুষ। তাদের রুটিরুজির ব্যবস্থা হয় এই কলকারখানা থেকে। তাই বিকল্প পণ্য বাজারজাত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্লাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেবে ভারত সরকার। ভারতের প্রতিটি রাজ্যে প্লাস্টিকের ব্যাগ, কাপ, প্লেট, থালা, স্ট্র ইত্যাদি ব্যবহার হয়ে আসছে। এসব পণ্যের বিকল্প পণ্য তৈরি না করে প্লাস্টিক পণ্য হঠাৎ নিষিদ্ধ করা হলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশজুড়ে। তাই এখন ভারত সরকার প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহারের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে প্রচার চালাবে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এই ঘোষণার পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে সব প্লাস্টিকের ব্যানার, হোল্ডিং পাল্টে পাট নিয়ে তৈরি চটে করা হবে। এতে পরিবেশ ঠিক থাকবে। রাজ্যের সব সরকারি দপ্তর, পৌরসভা এবং পঞ্চায়েতের সব হোল্ডিং, ব্যানার চটের ওপর করার সিদ্ধান্তের কথা ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন মমতা। এই খবর প্রচারের পর পশ্চিমবঙ্গের পাটশিল্পে সুদিন আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে করে রাজ্যের পাটশিল্পে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে।

গতকাল বুধবার ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে মহাত্মা গান্ধীর কর্মস্থল সবরমতী আশ্রমে এক সুধী সমাবেশে যোগ দেন। সেখানে তিনি বলেন, স্বচ্ছ ভারতের পর এবার প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ভারত গড়া সংকল্প বাস্তবায়িত হলো।

২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর নরেন্দ্র মোদি স্বচ্ছ ভারত গড়ার ঘোষণা দেন। ২০১৪ সালের এই ২ অক্টোবর ওই ঘোষণায় বলা হয়, ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর ভারত হবে প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ভারত। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় ব্যাপক সাড়াও মেলে।

সরকারে পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের অক্টোবরে যেখানে শৌচমুক্ত গ্রামীণ এলাকা ছিল ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ, সেখানে ২০১৯–এর অক্টোবর এসে তা বেড়ে হয়েছে ১০০ শতাংশ। এই ৫ বছরে ভারতে গ্রামীণ শৌচালয় নির্মাণ হয়েছে ১০ কোটি ৭ লাখ। প্রকাশ্যে শৌচমুক্ত গ্রাম হয়েছে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬০টি।

কেন্দ্রীয় সরকারের আবাসন ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ৫২টি পৌরসভা ও পৌর করপোরেশন এখনো শৌচমুক্ত হতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া দেশের ৩৬টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পৌরসভা ইতিমধ্যে প্রকাশ্য শৌচমুক্ত পৌরসভা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।