পাকিস্তানকে 'ডার্ক গ্রে' তালিকায় নামিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। রয়টার্সের ফাইল ছবি
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। রয়টার্সের ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগানদাতাদের পর্যবেক্ষক সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে। সন্ত্রাসবাদে সহযোগিতায় অবস্থান পরিবর্তন না করলে দেশটিকে ‘ডার্ক গ্রে’ (গাঢ় ধূসর) তালিকায় নামিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে শেষবারের মতো হুঁশিয়ার করে দিয়েছে সংস্থাটি।

এফএটিএফের চলমান অধিবেশনে উপস্থিত কর্মকর্তারা বলেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, পাকিস্তান যথাযথ অবস্থান না নেওয়ায় অন্য সদস্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোপনীয় একটি সরকারি সূত্র জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদে সহযোগিতা বন্ধে পাকিস্তান আশানুরূপ পারফরম্যান্স দেখাতে না পারায় এফএটিএফের কঠোর পদক্ষেপের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। সংস্থাটির ২৭টি আইটেমের মধ্যে মাত্র ৬টিতে পাস করতে পেরেছে তারা।

এফএটিএফ ১৮ অক্টোবর পাকিস্তানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

এফএটিএফের নিয়ম অনুসারে, ‘গ্রে’ (ধূসর) এবং ‘ব্ল্যাক’ (কালো) তালিকার মধ্যবর্তী পর্যায়টি ‘ডার্ক গ্রে’ হিসেবে পরিচিত। অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, ডার্ক গ্রের অর্থ একটি শক্তিশালী সতর্কতা জারি করা, যাতে সংশ্লিষ্ট দেশটি শেষবারের মতো উন্নতির সুযোগ পায়।

এর আগে ‘ডার্ক গ্রে’শব্দটি তৃতীয় পর্যায়ের সতর্কতার জন্য ব্যবহৃত হতো। এখন চতুর্থ ধাপে এসে একে কেবল সতর্কতা বলা হয়। এই সতর্কতা জারির পরও কেউ যদি সন্ত্রাসবাদে আর্থিক জোগান দেওয়া বন্ধ না করে, তবে সে দেশকে কালো তালিকাভুক্ত করে এফএটিএফ।

এফএটিএফ ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি আন্তর্দেশীয় সরকারি সংস্থা। আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার অখণ্ডতার জন্য অর্থ পাচার, সন্ত্রাসবাদী অর্থায়ন এবং অন্যান্য হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করে সংস্থাটি।

গত বছরের জুন মাসে প্যারিসভিত্তিক নজরদারি সংস্থাটি পাকিস্তানকে গ্রে তালিকাভুক্ত করেছিল। সে সময় ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসের মধ্যে দেশটিকে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। অবস্থান পরিবর্তনে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করতে না পারলে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কালো তালিকাভুক্ত করার হুমকি দেওয়া হয় তাদের।

পাকিস্তান যদি ‘গ্রে’ তালিকায় নিজের অবস্থান অব্যাহত রাখে বা ‘ডার্ক গ্রে’ তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়, তবে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া দেশটির জন্য খুব কঠিন হয়ে যাবে। এতে পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।