চার আঙুল কেটে চুরির শাস্তি দিল ইরান

চুরি করার শাস্তি হিসেবে ইরানে এক ব্যক্তির ডান হাতের চারটি আঙুল কেটে নেওয়া হয়েছে। শরিয়া আইন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান। তবে এমন অমানবিক শাস্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এমন শাস্তিকে ‘নির্যাতনের ঘৃণ্যতম রূপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে সংস্থাটি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য-উত্তর ইরানের মাজান্দারান প্রদেশের একটি কারাগারে গত বুধবার এই শাস্তি কার্যকর করা হয়। শাস্তিপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২৮টি চুরির মামলা ছিল বলে জানিয়েছে ইরানের কর্তৃপক্ষ। তবে ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি। ইরানের পেনাল কোডে চুরির শাস্তি হিসেবে ডান হাতের চারটি আঙুল কেটে নেওয়ার বিধান রয়েছে।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি বলেছে, কোনো মানুষের অঙ্গচ্ছেদ করা রীতিমতো অন্যায়ের পর্যায়ে পড়ে। অ্যামনেস্টির মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা–বিষয়ক সহকারী পরিচালক সালেহ হিগাজি সেই বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই শাস্তি মানবাধিকারের চরম লাঞ্ছনাস্বরূপ। ইরানের এই নির্মম পেনাল কোডের সংস্কার করা জরুরী।’

এর আগে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ভেড়া চুরির অভিযোগে ৩৪ বছর বয়সী এক ইরানি নাগরিকের হাত কেটে নেওয়া হয়। ইরান ছাড়াও সৌদি আরব, নাইজেরিয়া ও সোমালিয়াতে শাস্তি হিসেবে অঙ্গচ্ছেদের আইনর চালু রয়েছে।

গত বছর আরেকটি বিতর্কিত শাস্তির নির্দেশ দিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তোপের মুখে পড়েছিল ইরান। কিশোর বয়সে মদ্যপান করেছিলেন এমন অভিযোগ এনে মদ্যপানের ১০ বছর পর এক ব্যক্তিকে বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ধর্ষণের অভিযোগে দুই কিশোরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এই শাস্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল তখন। অ্যামনেস্টির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯০ সালের পর থেকে ইরান প্রায় ১০০ কিশোর অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে যা বেশি।