কারবালায় নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ১৪ জন নিহতের দাবি

সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী এক ব্যক্তি বিজয়সূচক চিহ্ন দেখাচ্ছেন। ছবি: এএফপি
সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী এক ব্যক্তি বিজয়সূচক চিহ্ন দেখাচ্ছেন। ছবি: এএফপি

ইরাকের কারবালা শহরে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া প্রায় ৮৬৫ জন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। তবে এই ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করেছে কারবালার স্থানীয় প্রশাসন।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ মঙ্গলবার কারবালায় আন্দোলনকারীদের ওপর এই হামলা চালায় নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী। আন্দোলনকারীরা যেখানে জমায়েত হয়েছিলেন (ইমাম হুসেইনের সমাধিস্থল), সেখান থেকে প্রায় ১ দশমিক ২ কিলোমিটার দূরে এই ঘটনা ঘটে।

তবে কারবালার পুলিশপ্রধান আহমেদ জুয়েইনি এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, পুলিশের গুলিতে কোনো আন্দোলনকারী নিহত হননি। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় এক অপরাধী নিহত হয়েছেন, তবে সেটির সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুলিশের গুলিবর্ষণের যে ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, সেটিকে ‘বানোয়াট’ বলেও দাবি করেছেন তিনি।

এক প্রত্যক্ষদর্শী আল-জাজিরাকে বলেছেন, আজ একটি চলন্ত গাড়ি থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর আকস্মিকভাবে গুলিবর্ষণ শুরু হয়। এরপর কালো মুখোশধারীরা এসে আবারও গুলি করতে শুরু করে। এ সময় পুলিশের গুলিতে আন্দোলনকারীদের তাঁবুতেও আগুন ধরে যায়।

প্রায় এক মাস ধরে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে আন্দোলনকারীদের। ছবি: এএফপি
প্রায় এক মাস ধরে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে আন্দোলনকারীদের। ছবি: এএফপি

কারবালার গভর্নর নাসিফ আল-খাত্তাবিও কোনো আন্দোলনকারী নিহত হওয়ার ঘটনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। আন্দোলনকারীদের সামাল দিতে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সংযমের প্রমাণ দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। আন্দোলনকারীরা অস্ত্র ও আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন করছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।

এর আগে ইরাকের মানবাধিকারসংক্রান্ত হাইকমিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তারা বিবৃতিতে পরিবর্তন এনে জানায়, মাত্র ১ জন নিহত এবং ১৯২ জন আহত হয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজই দাঙ্গাবিরোধী পুলিশের একটি দল বাগদাদের তাহরির স্কয়ারের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। পঞ্চম দিনের মতো চলমান সেই বিক্ষোভে ছাত্রসহ সাধারণ জনগণও অংশগ্রহণ করছেন।

সরকারি দুর্নীতি, বেকারত্বের উচ্চ হার এবং দুর্বল সরকারি সেবার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে চলতি মাসের প্রথম থেকেই বিক্ষোভ করছেন ইরাকের জনগণ। রাজধানী বাগদাদসহ বিভিন্ন শহরে চলমান এই আন্দোলনে এরই মধ্যে ২৫০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন।