৪৩ বছর পর কিউবায় নতুন প্রধানমন্ত্রী

৪৩ বছর পর কিউবায় প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হলেন ম্যানুয়েল মারেরো ক্রুজ। ছবি: এএফপি
৪৩ বছর পর কিউবায় প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হলেন ম্যানুয়েল মারেরো ক্রুজ। ছবি: এএফপি

৪৩ বছর পর কিউবায় প্রধানমন্ত্রীর পদ পুনর্বহাল হয়েছে। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী ম্যানুয়েল মারেরো ক্রুজ। সবশেষ এ পদে ছিলেন বিশ্বের আলোচিত বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। তিনি ক্ষমতায় থাকার সময়ে ১৯৭৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর পদটি বিলুপ্ত করেছিলেন।

আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, কমিউনিস্ট পরিচালিত দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে এই বছরের শুরুতে পাস হওয়া নতুন সংবিধানের বিধির আলোকে প্রধানমন্ত্রীর পদ পুনর্বহাল করা হয়েছে। কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেল দেশটির পর্যটনমন্ত্রী ম্যানুয়েল মারেরো ক্রুজকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করেছেন। প্রেসিডেন্টের ওপর অর্পিত বেশ কিছু দায়িত্ব এখন থেকে পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ৫৬ বছরের মারেরো।

কিউবার রাষ্ট্রীয় অনলাইন নিউজ আউটলেট কিউবাডিবেট জানিয়েছে, সরকারপ্রধান হবেন প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টের প্রশাসনিক ডান হাত।
তবে সমালোচকদের দৃষ্টিতে, এ ধরনের পরিবর্তন প্রলেপ ছাড়া কিছুই নয়। এ দেশে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেবল
কিউবান কমিউনিস্ট পার্টি এবং সামরিক বাহিনী—এই দুটি সংস্থার থাকবে।

গতকাল শনিবার দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মারেরোর নিয়োগ সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।

রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্রানমায় বলা হয়, দেশের পর্যটনশিল্পের ‘ঘাঁটি থেকে’ রাজনীতিক হিসেবে আবির্ভূত হন মারেরো। পর্যটনশিল্প হচ্ছে কিউবার অন্যতম প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎস। সামরিক বাহিনী পরিচালিত পর্যটন গ্রুপ গেভিয়োতায় ২০০০ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ পান। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর গেভিয়োতার হোটেলগুলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে। ২০০৪ সালে ফিদেল কাস্ত্রো মারেরোকে পর্যটনমন্ত্রী নিযুক্ত করেন। তাঁর সময়ে দেশটিতে পর্যটন খাত বিকশিত হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পরও মারেরা পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

অ্যাসেম্বলিতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মারেরোর নাম ঘোষণার সময় প্রেসিডেন্ট দিয়াজ-কানেল বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় মারেরোর পারদর্শিতার প্রশংসা করেন। এ সময় তিনি মারেরোর ‘সততা, কাজে দক্ষতা এবং কমিউনিস্ট পার্টি ও বিপ্লবের প্রতি আনুগত্যের’ বিষয়ও তুলে ধরেন।

১৯৫৯ সালে কমিউনিস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে ফিদেল কাস্ত্রো কিউবার তৎকালীন সরকারের পতন ঘটান এবং নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন। পদটি বিলুপ্ত করার পর তিনি কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট হন। তবে অসুস্থতার কারণে ২০০৬ সালে তিনি তাঁর ভাই রাউল কাস্ত্রোর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। ২০১৬ সালে মারা যান ফিদেল কাস্ত্রো। ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে দেন রাউল কাস্ত্রো। তবে কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান এবং এর রাজনীতির মূল শক্তি হিসেবে তিনি রয়ে গেছেন। মারেরোকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণার সময় তিনি অ্যাসেম্বলিতে উপস্থিত ছিলেন।