সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বিজেপির দিলীপ

দিলীপ ঘোষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
দিলীপ ঘোষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আবার বিতর্কিত মন্তব্য করে তীব্র রাজনৈতিক আক্রমণের মুখে পড়েছেন। তাঁকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছে বিরোধীরা।

গত রোববার পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রানাঘাটে দলীয় এক সভায় হুমকির সুরে দিলীপ বলেন, সিএএ ও এনআরসিবিরোধী আন্দোলনের নামে যারা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করবে, ক্ষমতায় এলে তাদের গুলি করে মারা হবে। গতকাল মঙ্গলবার মেদিনীপুরে দিলীপ বলেন, বাংলা এখন দেশদ্রোহীদের গড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে বন্দে মাতরম, জয় হিন্দের স্লোগান উঠছে, সেখানে যদি কেউ পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে, তাহলে ভাবতেই হবে, এটা দেশদ্রোহীদের গড় হয়ে গেছে। এই দেশদ্রোহীদের আখড়া থেকে বাংলাকে মুক্ত করতে হবে।

দিলীপের এই মন্তব্যের পর তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল বলেন, আসল দেশদ্রোহী দিলীপ। তাঁকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক।

দিলীপের আক্রমণাত্মক মন্তব্যের জেরে ইতিমধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া ও নদীয়ার রানাঘাট থানায় দুটি পৃথক মামলা করেছে তৃণমূল।

অন্যদিকে যুব কংগ্রেস কলকাতার বউবাজার থানায় দিলীপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেছে। আবেদনটি করেছেন যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি মহম্মদ শাদাব খান।

দিলীপের মন্তব্যের পর জাতীয় কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে এই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন।

বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল রোববার বলেছিলেন, আগে কেন্দ্রীয় সরকার দিলীপকে গুলি করে মারুক। গতকাল অনুব্রত মণ্ডল বলেন, সবচেয়ে বড় দেশদ্রোহী দিলীপ। তাঁকেই আগে গ্রেপ্তার করা হোক।

তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও মন্ত্রী তাপস রায় বলেন, সুভাষচন্দ্র, স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের ইতিহাসধন্য এই বাংলা। দিলীপের কাছ থেকে বাঙালির দেশপ্রেমের প্রশংসাপত্রের প্রয়োজন নেই। দিলীপের রাজনৈতিক পূর্বসুরীদের ব্রিটিশদের কাছে মুচলেকার ইতিহাস বাংলা তথা এই দেশ জানে।

সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য ও সাবেক সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘যে জাতীয় সংগীতের জন্য উনি (দিলীপ) উঠে দাঁড়ান, সেই জাতীয় সংগীত কিন্তু এক বাঙালির লেখা। সংঘের কোনো দালালের নয়। তাই দিলীপ বাংলাকে দেশদ্রোহীদের গড় হিসেবে মন্তব্য করে বাংলাকে অপমান করেছেন।’

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার বিরোধী কংগ্রেসদলীয় নেতা আবদুল মান্নান বলেন, ‘উলুখাগড়ার কথায় কী আসে–যায়? যাঁদের নেতা নাথুরাম গডসে, স্বাধীনতাসংগ্রামে যাঁদের কোনো শহীদ নেই, অবদান নেই, তাঁদের কাছ থেকে দেশপ্রেম শিখব না।’