ভোটের মুখে রাম মন্দির ট্রাস্টের ঘোষণা নরেন্দ্র মোদির

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি

দিল্লি বিধানসভা ভোটের ঠিক তিন দিন আগে অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ট্রাস্ট গঠনের কথা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে সোজা লোকসভায় এসে এই ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই ট্রাস্টের নাম হবে ‘শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট’। মন্দির নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত এই ট্রাস্ট স্বাধীনভাবে গ্রহণ করবে।

ট্রাস্টের মোট সদস্য সংখ্যা হবে ১৫। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইট করে এই কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেছেন, ওই ১৫ জনের মধ্যে একজন হবেন দলিত শ্রেণির। কিন্তু ট্রাস্টের সদস্য কারা হচ্ছেন সরকারিভাবে তা এখনো জানানো হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অধিগৃহীত মোট ৬৭ একর জমিই এই ট্রাস্টের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতি টানা শুনানি শেষে জানিয়েছিলেন, অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে। মসজিদ নির্মাণের জন্য উত্তর প্রদেশ সরকার পাঁচ একর জমি চিহ্নিত করে তা তুলে দেবে সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ডকে। সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছিলেন, মন্দির নির্মাণের দায়িত্ব তুলে দিতে এক ট্রাস্ট গঠন করতে হবে। সে জন্য সরকারকে তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছিল। আগামী রোববার, ৯ ফেব্রুয়ারি, সেই সময়সীমা উত্তীর্ণ হবে।

তিন মাস সময় থাকলেও সরকার এত দিন ট্রাস্ট গঠন বা তা ঘোষণার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ঘোষণা হলো সেই সময়, বিধানসভা ভোট নিয়ে দিল্লি যখন উত্তেজনায় ফুটছে। বিরোধীদের মতে, সরকার স্পষ্টতই এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক লাভের অঙ্ক কষতে চেয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ভোটের আগে এই ঘোষণার মাধ্যমে হিন্দু ভাবাবেগে উসকানি দিয়ে বিজেপি দিল্লির জনমতকে প্রভাবিত করতে চাইছে। সিএএ ও এনআরসির বিরুদ্ধে শাহিনবাগসহ বিভিন্ন স্থানের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ অবস্থানকে ইতিমধ্যেই তারা ধর্মীয় আলোয় প্রচার করছে। সেই প্রচারে বাড়তি বাতাস দিতে তারা ট্রাস্ট গঠনের ঘোষণাকে ব্যবহার করেছে বলে বিরোধীদের অভিমত।

স্বাভাবিকভাবে তাই প্রশ্ন উঠছে, ভোটের তিন দিন আগে এই সিদ্ধান্ত নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে কি না। নির্বাচন কমিশন অবশ্য জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকার এই ঘোষণা করেছে। এ জন্য কমিশনের অনুমতির প্রয়োজন নেই। তা ছাড়া এই ঘোষণা নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করছে না।