করোনাভাইরাস থেকে রোগের নাম 'কোভিড-১৯'

সাবওয়ে স্টেশনে আগত লোকজনের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন চীনের স্বাস্থ্যকর্মীরা। ছবি: এএফপি
সাবওয়ে স্টেশনে আগত লোকজনের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন চীনের স্বাস্থ্যকর্মীরা। ছবি: এএফপি

আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকায় বিশ্বজুড়ে এখন আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে উৎপত্তি হওয়া ভাইরাসটি এখনো অনেকটাই অজানা বিজ্ঞানীদের কাছে। রোগের ধরন দেখে এটাকে করোনাভাইরাস-গোত্রীয় বলে নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।

২০১৯ সালের শেষ দিকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটিকে দেড় মাস ধরে চীনের নতুন করোনাভাইরাস হিসেবেই ডাকা হচ্ছে। তবে এই নতুন করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট রোগের একটি নাম অবশেষে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কোভিড-১৯’।

আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসাস সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সাংবাদিকদের এই নতুন নামকরণের বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, ‘এই রোগের এখন একটি নাম রয়েছে আমাদের কাছে। এটির নাম কোভিড-১৯।’

করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা এখন হাজার ছাড়িয়েছে। ড. গেব্রেইয়েসাস নতুন ভাইরাসটির বিরুদ্ধে যতটা সম্ভব লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

করোনাভাইরাস শব্দটি বলতে ভাইরাসের একটি গোষ্ঠীকে বোঝায়। ভাইরাসটির কারণে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে একে আলাদা কোনো নামে শনাক্ত করার পরিবর্তে ওই ভাইরাসটির গোষ্ঠী ধরেই ডাকা হচ্ছে। ভাইরাসের শ্রেণিবিন্যাস-সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কমিটি ‘ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অন ট্যাক্সোনমি অব ভাইরাসেস’ ভাইরাসটিকে সার্স-কভ-২ বলে আসছিল। তবে একটি নির্দিষ্ট দেশের ওপর কালিমা লেপন এড়াতে ও দ্বিধা দূর করতে গবেষকেরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগের একটি আনুষ্ঠানিক নামকরণের আহ্বান জানাচ্ছিলেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, এমন একটি নাম খুঁজে বের করার দরকার হয়েছিল, যেটি কোনো ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাণী, কোনো ব্যক্তি বা কোনো নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে না বোঝায়। একটি নাম থাকার মানে হচ্ছে, অন্য নাম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা, যা যথাযথ নয় বা কালিমা লেপনকারী। ভবিষ্যতে অন্য কোনো করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য এটি একটি মানসম্মত পদ্ধতি হিসেবেও থাকবে।

নতুন নামটি নেওয়া হয়েছে ‘করোনো’, ‘ভাইরাস’, ‘ডিজিজ (রোগ)’ এবং ২০১৯ সালে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের সময় ধরে ‘১৯’ (নাইনটিন) নম্বরটি থেকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নজরে আসে।

চীনে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪২ হাজার ২০০-এর বেশি মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যায় এটি ২০০২-০৩ সালের সার্স মহামারিকে ছাড়িয়ে গেছে।

গত সোমবার শুধু হুবেই প্রদেশে মারা গেছে ১০৩ জন, যা চীনে এক দিনে এত মানুষের মৃত্যুর সংখ্যার নতুন রেকর্ড।