করোনাভাইরাস-শঙ্কায় ৩৮০ বিদেশিকে আলাদা করল উ. কোরিয়া

চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর শুরুতে যে কয়টি দেশ চীনের সঙ্গে সীমানা বন্ধসহ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে, এর মধ্যে উত্তর কোরিয়া অন্যতম। ছবি: এএফপি
চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর শুরুতে যে কয়টি দেশ চীনের সঙ্গে সীমানা বন্ধসহ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে, এর মধ্যে উত্তর কোরিয়া অন্যতম। ছবি: এএফপি

করোনাভাইরাসের শঙ্কায় উত্তর কোরিয়া ৩৮০ জন বিদেশিকে কোয়ারেন্টাইন (রোগ সংক্রমণের শঙ্কায় পৃথক রাখা) করে রেখেছে। দেশটিতে করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ ঠেকাতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কোরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্রডকাস্টিং স্টেশনকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা ইয়নহাপের বরাতে আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, কোয়ারেন্টাইনে রাখা বিদেশিদের বেশির ভাগ কূটনীতিক এবং রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে কর্মরত।

চীনে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পর শুরুতে যে কয়টি দেশ চীনের সঙ্গে সীমানা বন্ধসহ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে, এর মধ্যে উত্তর কোরিয়া অন্যতম। দেশটিতে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য নেই।

বিবিসির খবরে বলা হয়, এর আগে উত্তর কোরিয়ায় ২০০ বিদেশিকে নিজেদের কম্পাউন্ডে এক মাসের জন্য অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। তবে সেই মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগে কোয়ারেন্টাইনের সময় আরও বাড়ানো হয়। বিদেশিদের জন্য এই নতুন কোয়ারেন্টাইন কত দিন থাকবে, সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানানো হয়নি।

উত্তর কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য না থাকলেও সেখানে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় নানা সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারণ, চীনের সঙ্গে দেশটির সীমান্ত রয়েছে। দেশটিতে প্রবেশ করা বিদেশিদের ৩০ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়।

তবে একজন বিশেষজ্ঞের দেওয়া তথ্য অনুসারে, উত্তর কোরিয়ায় বিদেশিদের সংখ্যা এমনিতেই কম। এর মধ্যে পশ্চিমা লোকজন রয়েছেন দুই শর মতো।

উত্তর কোরিয়া করোনাভাইরাসের কারণে বার্ষিক পিয়ংইয়ং ম্যারাথন বাতিল করেছে। ওই ম্যারাথনে সাধারণত বিশ্বের নানা দেশের মানুষকে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।

চীনের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা পিইয়নগান প্রদেশের প্রায় তিন হাজার বাসিন্দাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। বাসিন্দাদের মধ্যে কোভিড-১৯ রোগের সন্দেহজনক লক্ষণ দেখা যায় কি না, তা নজরে রাখা হয়েছে।

গত বছরের শেষ দিকে করোনাভাইরাস চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়ে। চীনে ভাইরাসটিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭৭ হাজার ১৫০ জন। মারা গেছেন ২ হাজার ৫০০–এর বেশি। ভাইরাসটি কমপক্ষে ২৯টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

চীনের পর সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে গত এক সপ্তাহের কম সময়ে সাত শতাধিক মানুষ কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হয়েছেন। মোট আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৭৬৩। মারা গেছেন সাতজন। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীতেও করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। বাহিনীর ১১ সদস্য আক্রান্ত হওয়ার পর ৭ হাজার ৭০০ সেনাকে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে।

ইরানে মোট আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৪৩। মারা গেছেন আটজন। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ইতালিতে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫২ জন, মারা গেছেন তিনজন।