বিজেপির ঘৃণার ভাষণের বিরুদ্ধে মামলা নিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি সংগৃহীত
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি সংগৃহীত

বিজেপি নেতাদের ‘হেট স্পিচ’ বা ঘৃণিত ভাষণের বিরুদ্ধে আনা মামলা সুপ্রিম কোর্ট গ্রাহ্য করলেন। আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে এই মামলা শুনতে রাজি হয়েছেন। আগামী বুধবার তাঁর এজলাসে মামলাটি শোনা হবে।

কয়েকটি ঘৃণিত ভাষণের পর দিল্লিতে দাঙ্গা হয়। চার দিন ধরে চলা সেই দাঙ্গায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক। দাঙ্গাপীড়িত ব্যক্তিদের পক্ষে আনা এই মামলার আরজি, যে নেতারা ‘হেট স্পিচ’ দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশকে অবিলম্বে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হোক। আবেদনকারীদের আরও দাবি, দাঙ্গার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য একটা বিশেষ দল গঠন করা হোক দিল্লির বাইরের কর্তাদের নিয়ে।

আবেদনকারীরা এই মামলা এর আগে দিল্লি হাইকোর্টে করেছিলেন। বিচারপতি মুরলীধর সেই মামলা শুনে চার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দাখিল করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। সলিসিটর জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ দাখিলের অনুরোধ জানাতে। ওই নির্দেশের পরপরই বিচারপতি মুরলীধরকে পাঞ্জাব হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলি করা হয়। পরের দিন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সরকারপক্ষের যুক্তি মেনে ওই মামলা ছয় সপ্তাহ পিছিয়ে দেন। সলিসিটর জেনারেলের যুক্তি ছিল, পুলিশ এই মুহূর্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তুলতে সচেষ্ট। পুলিশের অগ্রাধিকার সেটাই। আবেদনকারীরা এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে এই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বলেন, ‘কোনো ঘটনা আমরা আটকাতে পারি না। ঘটনা ঘটে গেলে আমরা কাজে নামি। আমাদের অনেক চাপের মধ্যে কাজ করতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমরাও খবরের কাগজ পড়ছি। কী ধরনের মন্তব্য হচ্ছে জানি।’

সিএএ ও এনআরসি নিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আন্দোলন চলছে। দিল্লিতে দুই মাসের ওপর পথ অবরোধ করে আন্দোলন চলছে শাহিনবাগে। বিধানসভার ভোটে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেটাই ইস্যু করেছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর স্লোগান তুলেছিলেন, ‘দেশ কো গদ্দারো কো’, জনতা জবাব দিয়েছিল ‘গুলি মারো সালোঁ কো’। দিল্লির সাংসদ পরবেশ বর্মা বলেছিলেন, ‘এই ভোট হিন্দুস্তান-পাকিস্তানের লড়াই।’। বিধায়ক কপিল মিশ্র পুলিশের বড় কর্তার উপস্থিতিতে অবরোধকারীদের হুমকি দিয়েছিলেন। সবই ছিল ‘হেট স্পিচ’। অথচ কারও বিরুদ্ধে দল ও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ‘গোলি মারো সালোঁ কো’ স্লোগান এখন রাজ্যে রাজ্যে শোনা যাচ্ছে। বুধবার বোঝা যাবে, হাইকোর্টের মতো সুপ্রিম কোর্টও দিল্লি পুলিশকে বাড়তি সময় দেন কি না।