'আমরা এখন স্বাস্থ্য-যুদ্ধে আছি'

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিকে ‘স্বাস্থ্য-যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। ছবি: এএফপি
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিকে ‘স্বাস্থ্য-যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। ছবি: এএফপি

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সামাজিক যোগাযোগ বন্ধে আরও আরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে ফ্রান্স ও জার্মানি। পুরো পরিস্থিতিকে ‘স্বাস্থ্য-যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। ইতালি ও স্পেনের মতো অবরুদ্ধ ব্যবস্থা কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

চীনের পর করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সবচেয়ে বড় আঘাতের স্থান ইতালিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজারেরও বেশি হয়েছে এবং মারা গেছে ১ হাজার ৮০০ জনের বেশি।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। এখন বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা চীনের অভ্যন্তরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। চীনের বাইরে ৮৭ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। চীনের অভ্যন্তরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৮০ হাজারের মতো।

জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার মানুষ। মারা গেছে ৬ হাজার ৭০০ জনের বেশি।

বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁ বলেন, আজ মঙ্গলবার থেকে ভ্রমণকারীদের প্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মাখোঁ লোকজনকে বাড়িতে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। শুধু জরুরি প্রয়োজনেই বাইরে যেতে বলেছেন।

মাখোঁ বলেন, ‘আমরা একটি স্বাস্থ্য-যুদ্ধে আছি। স্কুল, ক্যাফে, জরুরি পণ্য বিক্রি করে না—এমন দোকান বন্ধের মতো আগের পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করেছে এসব ব্যবস্থাই যথেষ্ট নয়।’ ১০ মিনিটের ভাষণে তিনি বলেন, যখন স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পরিস্থিতির গুরুতর অবস্থা নিয়ে সতর্ক করেছেন, তখন দেখা যাচ্ছে লোকজন পার্কে একত্র হচ্ছেন, বাজারে, রেস্তোরাঁ, বারে ব্যস্ত থাকছেন, এসব বন্ধের নির্দেশের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছেন না।

মাখোঁ জানান, ১৫ দিনের জন্য বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। নির্দেশ অমান্যকারী ব্যক্তিদের সাজা পেতে হবে।

জার্মানির বার্লিনের দোকানগুলোয় ক্রেতা কমে এসেছে। ছবি: রয়টার্স
জার্মানির বার্লিনের দোকানগুলোয় ক্রেতা কমে এসেছে। ছবি: রয়টার্স

মাখোঁ জানান, হাসপাতালে অসুস্থ ব্যক্তিদের নেওয়ার জন্য সেনাসদস্যদের নামানো হবে।

পরে ফ্রান্স সরকার জানিয়েছে, দেশজুড়ে অবরুদ্ধ ব্যবস্থা কার্যকরের জন্য এক লাখের বেশি কর্মকর্তাকে মোতায়েন করা হবে।

জার্মানিতে মুদি দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকান এবং ভেন্যু বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ধর্মীয় অনুষ্ঠানও নিষিদ্ধ করেছেন এবং লোকজনকে দেশের ভেতরে বাইরে ছুটি কাটাতে ভ্রমণ বাতিল করতে বলেছেন। ইতিমধ্যে দেশটিতে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ না করলেও পাব ও ক্লাব এড়াতে এবং অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ না করতে এবং একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ড. টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসাস অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারগুলো এই বৈশ্বিক মহামারি ঠেকাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না এবং তিনি সরকারগুলোকে নিজ নিজ দেশের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।