কলকাতা মেডিকেল ৩০০০ শয্যার করোনা হাসপাতালে রূপান্তর হচ্ছে

কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

করোনার ভয়াবহতা মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার কলকাতার ঐতিহ্যবাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ৩ হাজার বেডের করোনা হাসপাতাল হিসেকে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রথম পর্যায়ে মেডিকেল কলেজের স্পেশালিটি ওয়ার্ডে ৩০০ বেডের হাসপাতাল গড়া হচ্ছে। এই হাসপাতাল শনিবার থেকে চালু করারও ঘোষণা দেওয়া হয়।

হাসপাতালটির বিভিন্ন বিভাগে বাকি ওয়ার্ডগুলোও তৈরি হবে শিগগির। সে লক্ষ্যে গতকাল মঙ্গলবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের রোগীদের অবস্থা বুঝে কাউকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, আবার কাউকে কলকাতার চারটি সরকারি হাসপাতাল আর জি কর মেডিকেল কলেজ, নীলরতন মেডিকেল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এবং পিজি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

কলকাতা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, নতুন এই করোনা ব্লকে ৪৮টি সিসিইউসহ ২৩৭ বেডের আইসোলেসন ওয়ার্ড তৈরি করা হচ্ছে। এখানে যেসব চিকিৎসক ও নার্স কাজ করবেন, তাঁদের থাকারও ব্যবস্থা হয়েছে। আগামী শনিবার থেকে এই করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি শুরু হবে। এই হাসপাতালের আরও কটি ব্লককে নিয়ে আসা হচ্ছে করোনা ওয়ার্ড হিসেবে। বর্তমানে কলকাতা মেডিকেল কলেজে ২ হাজার ২০০ বেড রয়েছে। এখানে তৈরি ৩ হাজার বেডের করোনা ওয়ার্ড হবে।

গতকাল পর্যন্ত কলকাতা মেডিকেল কলেজের ৮০ শতাংশ বেড খালি করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালটি হবে শুধু করোনা চিকিৎসাকেন্দ্র।

করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ২৬টি বেসরকারি হাসপাতালে তৈরি করা হয়েছে ১৫৮টি বেড। একই সঙ্গে ভেন্টিলেশনসহ ৫৭১টি বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড।

কলকাতার বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালের বেডসংখ্যা বাড়িয়ে ৫৪টি করা হয়েছে। কলকাতার উপশহর রাজারহাটের কোয়ারেন্টিনেও বেডসংখ্যা ২০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর।

পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য পশ্চিমবঙ্গের ৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ও একটি ল্যাবকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই চারটি হাসপাতাল ও ল্যাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো থাকায় মূলত তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতাল, ফর্টিস, মেডিকা হাসপাতাল, নিউ টাউনের সুরক্ষা ও সল্টলেকের এসআরএল ল্যাবরেটরি। এই ৪ হাসপাতাল ও ল্যাবে কিট এলেই শুরু করা হবে করোনারভাইরাস পরীক্ষা।

আইসিএমআর জানিয়েছে, দুটি সংস্থা অ্যালতনা ডায়াগনস্টিক ও পুণের মাই ল্যাব করোনা কিট দেবে। এই দুটি সংস্থা কোভিড-১৯–এর নমুনা ১০০ শতাংশ পজিটিভ বা নেগেটিভ বলতে পারছে।

মাই ল্যাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা তাঁদের কিটের মূল্য নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ২০০ রুপি। তারা সপ্তাহে ১ লাখ পর্যন্ত কিট সরবরাহ করতে পারবে।

করোনাভাইরাস ঠেকাতে সারা দেশের সঙ্গে গতকাল রাত ১২টা থেকে লকডাউন শুরু হয়ে গেছে পশ্চিমবঙ্গেও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করোনা প্রতিহত করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার রাতে দেশবাসীর উদ্দেশে এক ভাষণে গোটা দেশকে লকডাউনের আওতায় নিয়েছেন।