পশ্চিমবঙ্গে ২২ জেলায় হচ্ছে ২২টি করোনা হাসপাতাল

বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের ২২ জেলায় ২২টি হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও অন্য কর্মকর্তাদের এক ভিডিও কনফারেন্সে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। ভিডিও কনফারেন্সে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।

পশ্চিমবঙ্গে আরও একজন করোনা রোগী গতকাল সোমবার রাতে মারা গেছেন। তিনি হাওড়ার জেলা হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুর আগে ওই রোগীর নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতার পিজি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেই রিপোর্ট আসে তাঁর মৃত্যুর পর। এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে করোনায় মারা গেলেন তিনজন। আর আক্রান্ত ২৫ জন।

করোনায় আক্রান্ত প্রথম যে তিনজন রোগী কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তাঁরা সুস্থ হয়েছেন। আজই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল ছাড়ার পর তাঁদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

গতকালই রাজ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে জেলার কোন হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে রূপ দেওয়া যায়, তা সবিস্তারে রাজ্য সরকারকে জানাতে বলা হয়।

ইতিমধ্যে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে তিন হাজার বেডের করোনা হাসপাতাল হিসেবে গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এ ছাড়া কলকাতার উপশহর রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ক্যানসার ইনস্টিটিউটকে দ্বিতীয় করোনা হাসপাতাল হিসেবে গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন এই ইনস্টিটিউট করোনায় আক্রান্ত রোগীদের কোয়ারেন্টিন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে ৩০০ বেডের কোয়ারেন্টিন রয়েছে। এটিকে করোনা হাসপাতালে রূপ দেওয়া হলে বেডের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৫০০।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, করোনা চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, আয়া, অ্যাম্বুলেন্সচালক, হেলপার, স্যাম্পল সংগ্রাহক, নিরাপত্তা কর্মী ও পুলিশের স্বাস্থ্য বিমার টাকার অঙ্ক বাড়িয়ে ৫ থেকে ১০ লাখ রুপি করা হয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা দিয়েছেন, রাজ্যের বাইর থেকে আসা ৪০ হাজার শ্রমিকের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদেরও রেশনের চাল অগ্রিম প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মমতা করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তবে মুদি দোকানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাজ্যের কাউকে না খেয়ে থাকতে হবে না। রাজ্য সরকার প্রত্যেক রাজ্যবাসীকে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রাজ্যে প্রচুর খাদ্য রয়েছে।

মমতা বলেছেন, আগামী এপ্রিল ও মে মাসেও সাবধানে থাকতে হবে। মোকাবিলা করতে হবে করোনা।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের কারাগার থেকে জামিন ও প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রাজ্যের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী ১ হাজার ১৭ জন সাজাপ্রাপ্ত ও ২ হাজার ৫৯ বিচারাধীন বন্দীকে জামিনে ও প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে তিন মাসের জন্য।