ভাগনের বাড়িতে গিয়ে নৌকায় কোয়ারেন্টিনে

পিয়ারলেস হাসপাতাল। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
পিয়ারলেস হাসপাতাল। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পেশা তাঁর কীর্তন গাওয়া। নাম নিরঞ্জন হালদার। বয়স ৬০। নিরঞ্জন কীর্তনীয়ার বাড়ি নদীয়ায়। গত শনিবার তিনি গিয়েছিলেন মালদহের হাবিবপুরের ডুবপাড়ায় তাঁর ভাগনের বাড়িতে। সেখানে গিয়েই পড়ে গেলেন বিপদে। গ্রামবাসীর দাবি, তাঁকে থাকতে হবে একা। তা অন্য কোথাও।

গ্রামের লোকজন নিরঞ্জনকে দেখে আর থাকতে দেয়নি ভাগনের বাড়িতে।

ভাগনের বাড়িতে আলাদা কোনো ঘর ছিল না নিরঞ্জনকে রাখার।

অবশেষে গ্রামবাসী ঠিক করে দেন, গ্রামেরই টাঙন নদের তীরে বাঁধা একটি নৌকায় থাকতে হবে নিরঞ্জনকে।

গ্রামবাসীর কথায় রাজি হন নিরঞ্জন। এরপর তিনি ঠাঁই নেন ওই নৌকায়।

শনিবার থেকে নিরঞ্জন নৌকায় অবস্থান করছেন।

গতকাল বুধবার বিকেলে এই ঘটনার কথা প্রশাসনিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। প্রশাসন নিরঞ্জনকে নৌকা থেকে অন্যত্র রাখার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা যায়।

বারানসি থেকে বাইসাইকেলে মুর্শিদাবাদে
পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের ১২ শ্রমিক গিয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের বারানসিতে। সেখানে তাঁরা চুল বিক্রি করতেন ফেরি করে। তাঁরা বারানসি জেলার বিভিন্ন গ্রামে বাইসাইকেলে করে চুল বিক্রি করে আসছেন।

দেশে লকডাউন শুরুর হলে ওই শ্রমিকেরা আর নিজের গ্রামে ফেরার কোনো সুযোগ পাচ্ছিলেন না। অবশেষে তাঁরা ঠিক করেন, নিজেদের কাছে থাকা বাইসাইকেল নিয়ে তাঁরা ফিরবেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গার বিভিন্ন গ্রামে।

বেনারস থেকে বেলডাঙ্গার দূরত্ব ৭০০ কিলোমিটার। শনিবার এই ১২ শ্রমিক রওনা হন তাঁদের বাইসাইকেল নিয়ে। গতকাল তাঁরা পৌঁছান বেলডাঙ্গায়।

বেলডাঙ্গায় ফিরে শমসের আলী বলেছেন, ‘আমরা ১২ জন সাইকেল চালিয়ে ফিরেছি বেলডাঙ্গায় ৭০০ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে।’

গতকাল কলকাতার বেসরকারি পিয়ারলেস হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত এক রোগী আট দিন লড়াই করে মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও ছেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ করোনায় মৃত মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল রাজ্য সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, রাজ্যে তিনজন করোনায় মারা গেছেন। অন্যদের ছিল অন্যান্য রোগ। আর আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৭। কলকাতার সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে এই সংখ্যা ৫০।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, রাজ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন সাতজন। সেটা জনগণ জানে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আড়াল করতে চাইছেন করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা এদিন সংবাদ সম্মেলন জানান, দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলিগ জামাতে যোগ দেওয়া পশ্চিমবঙ্গের ৭৩ জন মুসল্লির মধ্যে ৫৪ জনকে শনাক্ত করে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের শনাক্তকরণের কাজ চলছে।

লোকজন লকডাউন না মানায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘আরও দুই সপ্তাহ আমাদের নিজেদের স্বার্থে লকডাউন মানতে হবে। নইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’