জাপান স্বাস্থ্যঝুঁকিতে, দ্রুত পদক্ষেপ চান বিশেষজ্ঞরা

জাপানের বড় শহরগুলোয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে দেশের স্বাস্থ্যসেবাব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে জাপান সরকারের একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল। প্যানেলটি বলছে, পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। তবে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া না হলে রাজধানী টোকিওর পাশাপাশি কানাগাওয়া, আইচি, ওসাকা ও হিউগোর স্বাস্থ্যসেবাব্যবস্থা চাপের মুখে পড়বে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় লোকজনকে যতটা সম্ভব সীমিত পরিসরে বাইরে বের হতে বলা দরকার মনে করছে এই প্যানেল। জাপান সরকার অবশ্য প্যানেলের সুপারিশের পরও তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা বা লকডাউনের সম্ভাবনা নাকচ করেছে। সরকার বলছে, পরিস্থিতি এখনো তেমন ভয়াবহ হয়নি।

স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার টোকিওতে নতুন আরও ৬৬টি সংক্রমণে বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়। সর্বশেষ এই হিসাব নিয়ে জাপানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এখন ৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। করোনা সংক্রমণ জাপানের অর্থনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। আজ প্রকাশিত এক হিসাবে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি না হলে আগামী ১২ মাস জাপানের বিমান পরিবহন খাত ৯০০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হবে।

ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হিউগো বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষক দল বলছে, ভাইরাসের সংক্রমণে রাজধানী টোকিওর ২৩টি ওয়ার্ডে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড এক মাস ধরে সীমিত আকারে চলছে। এ রকম পরিস্থিতি থাকলে জাপানের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন প্রায় ২৮ লাখ কোটি ইয়েন কমে যাবে। এটি মোট জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ৫ শতাংশ।

মস্কো সফর বাতিল করতে পারেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী
জাপান সরকারের কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আগামী মাসের শুরুতে নির্ধারিত রাশিয়া সফর বাতিল করে দিতে পারেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার বিজয়ের ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে ৯ মে স্মারক অনুষ্ঠানে আবের যোগ দেওয়ার কথা ছিল। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একই সঙ্গে দুই দেশের অমীমাংসিত ভূখণ্ডগত বিরোধ নিয়েও পুতিনের সঙ্গে আবে আলোচনার পরিকল্পনা করছিলেন।

ফেস মাস্ক বিতরণের পরিকল্পনা
জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে গতকাল দেশটির সরকারের করোনাভাইরাস মোকাবিলার টাস্কফোর্সের বৈঠকে বলেন, একবার ব্যবহারযোগ্য ফেস মাস্কের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় জাপান সরকার দেশের আনুমানিক ৫ কোটি পরিবারের জন্য বারবার ব্যবহারযোগ্য কাপড়ের মাস্ক বিনা মূল্যে সরবরাহের পরিকল্পনা করছে। চলতি মাসের শেষ দিকে এই বিতরণ শুরু হবে। তালিকাভুক্ত প্রতিটি বাড়ির ঠিকানায় ডাকযোগে দুটি করে মাস্ক পাঠানো হবে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে মাস্কের ব্যাপক ঘাটতি জাপানে দেখা দেয়। কোন কোন ক্ষেত্রে সস্তার মাস্ক উচ্চমূল্যে বিক্রি হতেও দেখা গেছে। বিশেষ করে অনলাইনে বেচাকেনার সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা তা করছেন।