করোনা আইন নিয়ে হাঙ্গেরিতে ক্ষোভ

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। রয়টার্স ফাইল ছবি
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। রয়টার্স ফাইল ছবি

ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ব্যস্ত তখন হাঙ্গেরির কট্টরপন্থী সরকার বিরোধী পক্ষকে দমনের পথে নেমেছেন। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এই সপ্তাহে পার্লামেন্টে নতুন আইন পাস করেছেন। ইউরোপে এ আইনকে দুরভিসন্ধিমূলক বলে সমালোচনা করা হচ্ছে।

পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের নতুন আইনকে অনেকে স্বৈরাচারী আইন ও ইউরোপের লজ্জা বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকেরা বলছেন, ইউরোপের অন্য দেশগুলো যখন করোনাভাইরাস থেকে নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য নানা নিয়ম জারি করছে তখন অরবার্ন ক্ষমতা কুক্ষিগত করার দিকে বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।

গত সোমবার হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পার্লামেন্টে জরুরি আইনটি দুই তৃতীয়াংশ ভোটে পাস হয়েছে। আইনটিতে বলা হয়েছে, কোয়ারেন্টিন কেউ না মানলে ৮ বছর এবং কেউ গুজব ও ছড়ালে ৫ বছর পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হবে।

সমালোচকেরা বলছেন, আইনটি অস্পষ্ট। এতে হাঙ্গেরিতে স্বাধীন মতামত প্রকাশ ও সাংবাদিকতা হুমকির মুখে পড়বে। পার্লামেন্টে অনুমোদিত জরুরি আইনটি অনির্দিষ্টকালের জন্য করা হয়েছে।

ফিডেজ পার্টি বা হাঙ্গেরিয় রক্ষণশীল নাগরিক জোটের প্রধান ভিক্টর অরবান ২০১০ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। তিনি বিতর্কিত ও বর্ণবাদী আচরণের জন্য সমালোচিত। গত বছর মে মাসে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে অরবানের ফিডেজ পার্টিকে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। ফিডেজ পার্টি ইউরোপিয়ান পিপলস গণতান্ত্রিক দলগুলির জোটের সদস্য। তবে ভিক্টর অরবান ওই জোটে কট্টরবাদী ও বিতর্কিত বলে পরিচিত।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে পরিবেশবাদী গ্রিন পার্টির সভানেত্রী রাজনীতিক স্কা কেলার বলেছেন, ব্রাসেলস, বার্লিন ও অন্য রাজনীতিকদের এখনই স্বৈরাচারমূলক আইনটির বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত। তিনি বলেন এই নাজুক সময়ে, জনগণের সুরক্ষার বিষয়টি না ভেবে তিনি তাঁর বিরোধীদের দমননীতির বিষয়টি মাথায় রেখে এই আইনটি পাস করিয়েছেন।

জার্মানির ক্ষমতাসীন ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দলের সভানেত্রী আনগেট কার্ম্প করেনবাওয়ার ও ইউরোপিয়ান পিপলস গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা ভিক্টর অরবানের এই স্বৈরাচারমূলক আইনটির সমালোচনা করে চিঠি দিয়েছেন। ইউরোপিয়ান পিপলস গণতান্ত্রিক জোটের সভাপতি ডোনাল্ড ট্রাস্ক বলেছেন, ভিক্টর অরবানের এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আইনের বিরুদ্ধে এখনই সবাইকে প্রতিবাদ করতে হবে।

হাঙ্গেরিতে করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত ৫২৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। ২০ জন মারা গেছে।