প্লাজমা দানে আগ্রহী তাবলিগের সদস্যরা

রয়টার্স প্রতীকী ছবি
রয়টার্স প্রতীকী ছবি
>ভারতে প্রচার চলছে, করোনার বিস্তারে তাবলিগ জামাতের সদস্যরাই দায়ী। এবার তাঁরাই সাহায্যে এগিয়ে এলেন।

ভারতে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনায় আক্রান্ত তাবলিগ জামাতের সদস্যরা রক্ত ও প্লাজমা দানে আগ্রহ দেখালেন। এই আগ্রহ গুরুতর করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা খুলে দেবে। সম্প্রতি দিল্লিতে যে ছয়জন গুরুতর অসুস্থের প্লাজমা থেরাপি করা হয়েছে, তাঁরা সবাই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। এতে উৎসাহিত মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীদের বেশি করে রক্ত ও প্লাজমা দানে অনুরোধ করেন।

দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস) ও হরিয়ানার ঝাজ্জরে ১৪২ জন করোনায় আক্রান্ত তাবলিগ জামাতের সদস্য ভর্তি হন। তাঁরা সবাই দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলিগ জামাতের দপ্তরে ছিলেন। আক্রান্তও হন সেখানেই। অসুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে ১২৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাঁরাই রক্ত ও প্লাজমা দানে রাজি। ঝাজ্জর হাসপাতালের চিকিৎসক সুষমা ভাট নগর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের অনুরোধে অধিকাংশই রাজি। আমরা এখন প্লাজমা সংগ্রহের চেষ্টা করছি।’

দিল্লির লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ সরকারি হাসপাতালে চারজন ও বেসরকারি সংস্থা ইনস্টিটিউট অব লিভার অ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সেসে দুজনের প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়। লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. জেসি প্যাসে বলেন, তাঁর হাসপাতালে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীরাও প্লাজমা দানে রাজি।

তাবলিগ জামাতের সদস্যদের কেউ কেউ ভবিষ্যতেও সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

করোনার ওষুধ এখনো অনাবিষ্কৃত, কিন্তু প্লাজমা থেরাপি যথেষ্ট কাজ দিচ্ছে। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের শরীরের অ্যান্টিবডি বা প্রোটিন করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করছে। সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীর রক্ত ও প্লাজমা অসুস্থের শরীরে প্রবেশ করিয়ে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। দিল্লিতে এই চিকিৎসাপদ্ধতি এতটাই সাড়া ফেলেছে যে মুখ্যমন্ত্রী দুদিন আগে সুস্থ ব্যক্তিদের আরও বেশি করে রক্তদানে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।

কেজরিওয়াল করোনায় আক্রান্ত সব রোগীকে সুস্থ করার উদ্দেশ্যে প্লাজমা দানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা চাই সবাই সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরুন। করোনা হিন্দু–মুসলমান মানে না। কে বলতে পারে, হিন্দুর জীবন মুসলমানের প্লাজমায় বাঁচবে না? প্লাজমা থেরাপির সাফল্য আমাদের উৎসাহিত করে তুলেছে।’

কিছুদিন ধরেই ভারতে প্রচার চলছে, করোনার প্রসারে তাবলিগ জামাতের সদস্যরাই প্রধানত দায়ী। এই সাম্প্রদায়িক প্রচার মুসলমান বিদ্বেষও বাড়াচ্ছে। ইসলামি দুনিয়াতেও এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওআইসির অভিযোগ, ভারতে ইসলামো ফোবিয়া বেড়ে চলেছে। এর জবাবে ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর বলেন, ‘মুসলমানদের কাছে ভারত স্বর্গ। এই দেশে মুসলমানদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় স্বাধীনতা অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি সুরক্ষিত।’