কলকাতায় করোনার আক্রমণ বেড়েই চলছে

৩ মে থেকে তৃতীয় দফা লকডাউন শুরু হয়েছে কলকাতায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
৩ মে থেকে তৃতীয় দফা লকডাউন শুরু হয়েছে কলকাতায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

যেমনটা ভাবা হয়েছিল তেমনটা হয়নি। বরং বেড়েই চলেছে কলকাতায় করোনার আক্রমণ। সেই সঙ্গে মৃত্যুও।

৩ মে তৃতীয় দফার লকডাউন শুরু হওয়ার পর কলকাতার মানুষ আশা করেছিল, করোনার ছোবল থেকে অনেকটাই রক্ষা পাবে কলকাতা। তেমনটা তো হয়ইনি, বরং দিনে দিনে কলকাতায় করোনা তার থাবা চওড়া করে চলেছে। বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা এবং সংক্রমণ এলাকা। এখন কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে কলকাতা।

পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল শনিবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় নবান্নে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে বেড়েছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এর সিংহভাগই কলকাতার। সঙ্গে রয়েছে কলকাতার পাশের হাওড়া, হুগলি, উত্তর আর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা।

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কলকাতার পর সংক্রমণ জোনের সংখ্যা বেশি উত্তর চব্বিশ পরগনা (৯২), হাওড়া (৭৬), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৩০) জেলায়। আর কলকাতায় গতকাল আরও দুটি জোন বেড়ে এখন হয়েছে ৩১৯টি সংক্রমণ জোন।

পশ্চিমবঙ্গে সব মিলিয়ে রয়েছে এখন ৫৭১টি। গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ৫৫টি।

আর তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউনের পর সব মিলিয়ে কলকাতায় মৃত্যুসংখ্যা বেড়ে এখন হয়েছে ৫৫।

স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১০৮ জন। ফলে এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ১ হাজার ৭৮৬–তে। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। সব মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯–তে। এ ছাড়া রয়েছে অন্যান্য উপসর্গের সঙ্গে করোনার আক্রমণে আরও ৭২ জনের মৃত্যু।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন করোনা চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১ হাজার ২৪৩ জন। গতকাল সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৯ জন। সব মিলিয়ে এই রাজ্যের বিভিন্ন করোনা চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৭২ জন করোনা রোগী।

সরকারি কোয়ারেন্টিনে এখন ৫ হাজার ৪৭৮ জন সন্দেহভাজন করোনা রোগী আছেন। আর হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ১৮ হাজার ৭৯৬ জন।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে এখনো করোনামুক্ত সাতটি জেলা রয়েছে। এ সাতটি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে সবুজ জোন হিসেবে। এগুলো হলো কোচবিহার, পুরুলিয়া, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, বাঁকুরা, আলিপুরদুয়ার ও ঝাড়গ্রাম।

আর সব থেকে আক্রান্ত ১১ জেলাকে রাখা হয়েছে লাল জোনে। এই ১১টি জেলা হলো কলকাতা, উত্তর চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, দার্জিলিং, পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদহ ও বীরভূম।

সামান্য আক্রান্ত হওয়া পাঁচটি জেলা রয়েছে কমলা জোনে। এই পাঁচটি জেলা হলো হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ।