সুবিধাবঞ্চিতরা চার গুণ বেশি করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে

প্রতীকী ছবি: ছবি: রয়টার্স
প্রতীকী ছবি: ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই নতুন নতুন গবেষণা প্রকাশ হচ্ছে। কখনো বয়স, কখনো স্বাস্থ্যের নিরিখে এসব গবেষণা করা হচ্ছে। গবেষণা হচ্ছে দেশের আর্থিক অবস্থার নিরিখেও। এবার নতুন একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, অপেক্ষাকৃত সুবিধাবঞ্চিত এলাকার মানুষেরা অভিজাত এলাকায় বসবাস করা মানুষের চেয়ে চার গুণ বেশি সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় নতুন এই গবেষণা করেছে। গতকাল শনিবার এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ৩ হাজার ৬০০টি নমুনার ওপর জরিপ চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন গবেষকেরা।

এই গবেষণার তথ্য অনুসারে, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাবঞ্চিত এলাকার ৬৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এর মধ্যে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত। এর বিপরীতে অভিজাত এলাকায় বসবাস করেন, এমন মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার ৭ দশমিক ৭ শতাংশ।

অক্সফোর্ডের এই গবেষণায় বয়সভিত্তিক তথ্যও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ অনুসারে, যুক্তরাজ্যের ৪০ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। করোনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এমন এই বয়সী মানুষের মধ্যে সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ। আর এর বিপরীতে ১৭ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।

এর আগে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের তুলনায় পুরুষেরা বেশি করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। অক্সফোর্ডের গবেষণা উপাত্ত থেকেও তাই জানা যাচ্ছে। এই তথ্য–উপাত্ত অনুসারে, পুরুষের মধ্যে সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ আর নারীদের ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ।

কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার চার গুণ বেশি যুক্তরাজ্যে। জানা গেছে, কৃষ্ণাঙ্গরা ৬২ দশমিক ১ শতাংশ সংক্রমিত হয়েছেন। আর শ্বেতাঙ্গরা ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ সংক্রমিত হয়েছেন করোনায়। এ ছাড়া অধূমপায়ীদের মধ্যে এই সংক্রমণের হার ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ। আর ধূমপায়ীদের মধ্যে সংক্রমণের হার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে গবেষকেরা বলছেন, এর মানে এই নয়, ধূমপান করোনা সংক্রমণ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। যাঁরা ধূমপান করে থাকেন, তাঁদের কাশি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, অনেক ধূমপায়ীর মধ্যে করোনায় অনেক উপসর্গ না থাকলেও শুধু কাশি থাকায় পরীক্ষা করছেন। ফলে শতাংশের হিসেবে তাঁদের সংক্রমণের হার কম দেখাচ্ছে। গবেষকেরা এ–ও ধারণা করছেন, ধূমপানের কারণে করোনা পরীক্ষার সঠিক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না—এমনটাও হতে পারে।