পশ্চিমবঙ্গ-ওডিশার দিকে ধেয়ে আসছে আম্পান

উত্তাল দীঘা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
উত্তাল দীঘা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশা উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার ঘূর্ণিঝড় আম্পান। কাল বুধবার দুপুর বা বিকেলের দিকে পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশার উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে আম্পান।

পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশা রাজ্যে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী এনডিআরএফ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুই রাজ্য গঠন করেছে ৩৭টি বিপর্যয় মোকাবিলা দল। প্রতিটি দলে রয়েছেন ৪৫ জন করে সদস্য। সঙ্গে থাকছে উদ্ধারসামগ্রী। বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর মহাপরিচালক এসএন প্রধান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

কলকাতার আলীপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাঞ্চলীয় কর্মকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কাল দুপুর বা বিকেলে আম্পান পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের দীঘা ও বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মাঝে সুন্দরবন অঞ্চলে প্রচণ্ড গতিতে আঘাত হানতে পারে। এ সময় পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা সমুদ্র উপকূলে ৪ থেকে ৬ মিটার এবং পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূলে ৪ থেকে ৬ মিটার উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। সমুদ্র থাকবে উত্তাল।

আছড়ে পড়ার সময় আম্পানের শক্তি কিছুটা কমে তা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হেত পারে বলে জানান সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, তখন ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬৫ থেকে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। যা বেড়ে পরে ১৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

আম্পানের প্রভাব পড়বে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। এসব স্থানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল সোমবার রাজ্য সচিবালয় নবান্নে সাংবাদিক সন্মেলনে বলেন, ঘোর দুর্যোগ আসছে। আম্পান মোকাবিলায় রাজ্যে শক্তিশালী টিম গঠন করা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা এই টিমের নেতৃত্ব দেবেন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলা দলকে। ইতিমধ্যে সে সব দলকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সম্ভাব্য দুর্যোগ–উপদ্রুত এলাকায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইতিমধ্যে দুই ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার ৮০ হাজার মানুষকে সাইক্লোন সেন্টার ও বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য দুর্গত এলাকায় ত্রিপলসহ ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে।

আজকের সবশেষ খবরে বলা হয়েছে, সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার নদীর পানি বাড়ছে। রায়দিঘির সিমানাঘাট সংলগ্ন নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে। কুলতলি, গোসাবা সাগর থানার বেশ কয়েকটি এলাকার নদী বাঁধ ভেঙে গেছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এসব এলাকার মানুষ।