করোনা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার রাজ্যে রাজ্যে তীব্র বাগযুদ্ধ

নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যের প্রিমিয়ার গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যের প্রিমিয়ার গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

অস্ট্রেলিয়ায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সীমান্ত খোলা নিয়ে তীব্র বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে দেশটির রাজ্য সরকারগুলো। করোনাভাইরাসের মূল উৎসের তদন্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার দ্বন্দ্ব রূপ নিয়েছে বাণিজ্যযুদ্ধে। আর এখন আবার নিজেদের মধ্যে শুরু হয়েছে দেশটির আন্তরাজ্য সীমান্ত খোলা নিয়ে বাগযুদ্ধ।

এক দেশ কিন্তু সমন্বয়হীনতার কারণে এ নিয়ে তৈরি হচ্ছে রাজ্যে রাজ্যে বৈরিতা। মুখোমুখি দেশটির তিন রাজ্য সরকার। নিউ সাউথ ওয়েলস, কুইন্সল্যান্ড ও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া। কয়েক দিন ধরে একে অপরকে দোষারোপ করছে তীব্র ভাষায়।

দেশটির প্রায় সবগুলো রাজ্যের সীমানাই বন্ধ রয়েছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রথম থেকেই। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় দেশটির রাজ্যের ভেতর বিধিনিষেধ ইতিমধ্যে অনেকটাই শিথিল করা হয়েছে। এর মধ্যে এই সপ্তাহের প্রথম দিকে দেশটির প্রধান শহর সিডনির রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলস জুনের ১ তারিখ থেকে তাদের সীমান্ত খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয়। কিন্তু অন্য রাজ্যগুলো এখনো সীমান্ত খোলার ঘোষণা না দেওয়ায় বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যের প্রিমিয়ার গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান। শুরুতে তিনি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়ার মার্ক ম্যাকগোয়ানকে খোঁচা দেন। বলেন, ‘আসলে, আমি নিশ্চিত যে প্রিমিয়াররা তাঁদের সীমান্ত বন্ধ রাখার জন্য নিজেদের রাজ্যে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন।’

এতেই চটে যান মার্ক ম্যাকগোয়ান। তিনি সরাসরি গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ানের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারকে ‘শাসানোর’ অভিযোগ তোলেন। বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সর্বাধিক জনবহুল রাজ্যের প্রিমিয়ার দ্বারা তাঁর সরকারকে “বুলি” (শাসানো) করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিউ সাউথ ওয়েলসে রুবি প্রিন্সেস ছিল এবং তারা এখন আমাদের সীমান্ত সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করছে? আপনি কি মনে করেন, তাদের কথা শোনা উচিত? আমি তাদের কথা শুনছি না।’

অন্যদিকে, কুইন্সল্যান্ডের প্রিমিয়ার অ্যানাস্টাসিয়া প্যালেসে এই সপ্তাহের প্রথম দিকে বলেছিলেন, তাঁর রাজ্যের সীমানা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। আজ সকালে বেরেজিক্লিয়ান এই বন্ধের সমালোচনা করে বলেন, ‘সারা দেশের অর্থনীতি পুনরায় চালু করার চেষ্টা করার সময় সীমান্ত বন্ধ “যৌক্তিক” মনে করেন না।’

এর জবাবে কুইন্সল্যান্ডের প্রিমিয়ার প্যালেসে একহাত নেন। বলেন, ‘দেশটিতে ভাইরাসটির প্রায় অর্ধেক ছড়িয়েছে এনএসডব্লিউ। তারা আর যা-ই করুক, কুইন্সল্যান্ডকে পরামর্শ দেওয়ার মতো অবস্থানে নেই।’ এ ছাড়া কুইন্সল্যান্ডের পরিবহনমন্ত্রী মার্ক বেইলি বলেন, ‘তাঁর সরকার অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স রাজ্যের দ্বারা বক্তৃতা শুনতে চায় না।’

আন্তরাজ্য ভ্রমণ করোনাভাইরাস মহামারি থেকে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে এবং অন্য রাজ্যগুলো তাদের সীমান্ত বন্ধ রাখলে পিছিয়ে পড়বে বলে দাবি করেন বেরেজিক্লিয়ান। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে সীমান্ত বন্ধ প্রত্যাহার করা দরকার।

অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার পল কেলি বলেন, তিনি আর রাজ্যের সীমানা বন্ধ রাখার কোনো স্বাস্থ্যগত কারণ দেখেন না।