একদিকে আম্পানের ধকল, অন্যদিকে করোনার কোপ

আম্পান বিধ্বস্ত এলাকায় গাছ কেটে সড়ক পরিষ্কার করা হচ্ছে। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
আম্পান বিধ্বস্ত এলাকায় গাছ কেটে সড়ক পরিষ্কার করা হচ্ছে। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ধকলের পাশাপাশি করোনার সঙ্গে লড়ছে পশ্চিমবঙ্গ। রেকর্ডসংখ্যক করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গে।

পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার হিসাবে বলা হয়, রাজ্যে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে ২০৮ জন। এই সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমণের ইতিহাসে এক দিনের নতুন রেকর্ড।

এখন পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির মোট সংখ্যা ৩ হাজার ৬৬৭ জন। চিকিৎসাধীন রয়েছে ২ হাজার ৫৬ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছে ২০০ জন।এ ছাড়া অন্য রোগের সঙ্গে করোনার উপসর্গে মারা গেছেন মোট ৭২ জন। 

মোট সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৩৩৯ জন।

রাজ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের সংখ্যায় এখনো শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। এরপর হাওড়া, তৃতীয় স্থানে উত্তর ২৪ পরগনা।

সমগ্র ভারতে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। এক দিন সংক্রমিত হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৪ জন। মারা গেছে ১৪৭ জন। সুস্থ হয়েছে ৫৪ হাজার ৪৪১ জন।

সব মিলিয়ে ভারতে এখন করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৮৬৭ জন। সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৬৮ জন। এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭৩ হাজার ৫৬০ জন। গত বুধবার আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ধাক্কা এখনো সামলে উঠতে পারেনি কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের ৬ জেলা। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। কলকাতায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে গত ৫ দিন ধরে কাজ করছে ভারতের সেনাবাহিনী, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা দল বা এনডিআরএফ, কলকাতার বিদুৎ সরবরাহকারী সংস্থা সিইএসসি, কলকাতা পৌর করপোরেশনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও পাড়ার ক্লাব।দিনরাত কাজ করেও কলকাতা শহরে ছড়িয়ে থাকা ভেঙে পড়া গাছপালা সরানো যায়নি। ঠিক করা যায়নি বিদ্যুতের খুঁটি।

রোববার রাজ্য স্বরাস্ট্র মন্ত্রণায় এক বিজ্ঞপিতে জানিয়েছে, আগামী বুধবারের মধ্যে কলকাতাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।

সিইএসসির কর্মকর্তা অভিজিৎ ঘোষ বলেন, কাল মঙ্গলবার কলকাতার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে। যদিও সিইএসসি থেকে বলা হয়েছে, কলকাতার ১৫টি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে স্বাভাবিক হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। 

কলকাতার ক্যাবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা আগামী দুদিনের মধ্যে কেবল সার্ভিস চালু করতে পারবে। এখন তাদের কর্মীরা ছেঁড়া তার বদলে নতুন করে সংযোগ দেওয়ার কাজে নেমে পড়েছেন।

কলকাতায় পানি, বিদ্যুৎ, মোবাইল ও ইন্টারনেট না পেয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দানা বেঁধে আছে। ইতিমধ্যে শহরের বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সড়ক অবরোধ করেছেন।