মোদির বক্তব্যের 'ক্ষতিকর ব্যাখ্যা' দেওয়ার অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি

লাদাখে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে ভারতে গতকাল সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এখন বলছে, ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদির একটি বক্তব্যের ‘ক্ষতিকর ব্যাখ্যা’ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।

ভারতের সরকারি সংস্থা প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর (পিআইবি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। সরকারি ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) লঙ্ঘনের যেকোনো চেষ্টার ক্ষেত্রে ভারত দৃঢ়তার সঙ্গে তা প্রতিহত করবে, এই বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী মোদি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। মূলত তিনি যে বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছেন সেটি হলো, এলএসি লঙ্ঘনের ঘটনাসম্পর্কিত চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে অতীতে যতটা অবহেলা দেখা গেছে, তার তুলনায় ভারতীয় বাহিনীগুলো সন্দেহাতীতভাবে আরও কঠোরভাবে এমন কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

সর্বদলীয় সভায় আরও জানানো হয়েছে যে চীনা বাহিনীগুলো এবার অনেক শক্তি নিয়ে এলএসি এলাকায় হাজির হয়েছিল এবং ভারতীয় বাহিনীগুলোও উপযুক্ত প্রত্যুত্তর দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে ১৫ জুন গলওয়ানে যে সংঘর্ষ হয়েছিল, তা ঘটার মূল কারণ চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা-সংলগ্ন এলাকায় ভারতীয় স্থাপনা উৎখাত করতে চেয়েছিল এবং ওই কর্মকাণ্ড থামাতে চায়নি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ‘যারা আমাদের ভূমিতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল, তাদের আমাদের দেশের সাহসী সন্তানেরা উচিত শিক্ষা দিয়েছেন।’ তিনি জোর দিয়ে আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে আমাদের সীমান্তসমূহ রক্ষা করার জন্য আমাদের সশস্ত্র বাহিনীগুলো কোনো চেষ্টাই বাদ রাখবে না।’

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এটি খুব দুর্ভাগ্যজনক যে এমন পরিস্থিতিতে যেখানে দেশের সাহসী সন্তানেরা সীমান্ত রক্ষা করছেন, তখন দেশের ভেতরে অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক হচ্ছে, যার কারণে সেনাদের মনোবল কমে যেতে পারে।

বিরোধীদের আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠকে জানান, ভারতের সীমানায় ঢুকে চীনা সেনারা কোনো ছাউনি বা পোস্ট দখল করেননি। এক ইঞ্চি জমিও কবজা করতে পারেননি। বরং ভারতের জওয়ানেরা আগ্রাসী চীনাদের উপযুক্ত শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, চীন যা করেছে, তাতে সারা দেশ আহত, ক্ষুব্ধ। ভারতীয় সেনা জল, স্থল ও অন্তরিক্ষ—সব দিক রক্ষা করতে প্রস্তুত।

লাদাখে চীনা আগ্রাসন নিয়ে সরকার এই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকে। চীনা আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা করে কংগ্রেসসহ সব বিরোধী দল এই সংকটে দৃঢ়ভাবে সরকারের পাশে থাকার কথা জানায়। যদিও সমর্থনের কথা জানানো সত্ত্বেও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী সরকারের সমালোচনা করেন।