চলে গেলেন সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য

নিমাই ভট্টাচার্য
নিমাই ভট্টাচার্য

চলে গেলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য। বার্ধক্যজনিত রোগে বেশ কিছুদিন অসুস্থ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জের নিজ বাসভবনে মারা যান তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।

১৯৩১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার শরশুনা গ্রামে নিমাই ভট্টাচার্যের জন্ম। শৈশব কেটেছে বাংলাদেশের গ্রামের বাড়িতে। দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালে তিনি চলে আসেন কলকাতায়। এখানে রিপন কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে পাস করেন আইএ এবং বিএ।

নিমাই ভট্টাচার্য তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন সাংবাদিকতা দিয়ে। ১৯৫০ সালে ‘লোকসেবক’ পত্রিকার মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর সাংবাদিকতা জীবন। ১৯৬৩ সালে সাপ্তাহিক ‘অমৃত বাজার’ পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয়। এরপর ওই পত্রিকায় আরও ৪টি উপন্যাস বের হয়। সাংবাদিকতা জীবনের পাশাপাশি তিনি চলে আসেন সাহিত্য জীবনে। সাংবাদিকতা জীবন নিয়ে তাঁকে থাকতে হয়েছে রাজধানী দিল্লিতে দীর্ঘদিন। এ সময় তিনি জওহরলাল নেহরু, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, মোরারজি দেশাই ও ইন্দিরা গান্ধীর মতো প্রধানমন্ত্রীর সংস্পর্শে আসেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীদের সফরসঙ্গীও হন।

নিমাই ভট্টাচার্য লিখেছেন ১৫০-এর বেশি উপন্যাস। তাঁর প্রখ্যাত উপন্যাস ‘মেম সাহেব’ চলচ্চিত্রায়ন হয়। ওই ছবিতে উত্তমকুমার ও অপর্ণা সেন অভিনয় করেন।

নিমাই ভট্টাচার্যের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘মিনিবাস’, ‘মাতাল’, ‘ইনকিলাব’, ‘ব্যাচেলর’, ‘কেরানী’, ‘রাজধানী এক্সপ্রেস’, ‘অ্যাংলো ইন্ডিয়ান’, ‘ডার্লিং’, ‘ইউর অনার’, ‘ককটেল’, ‘পথের শেষে’, ‘অষ্টাদশী’, ‘ডিপ্লোম্যাট’, ‘ম্যারেজ রেজিস্ট্রার’, ‘পিয়াসা’, ‘নাচনী’ । নিমাই ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে কলকাতার সাহিত্য এবং সংস্কৃতি মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁরা বলেছেন, আজ বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ঝরে পড়ল। তাঁরা নিমাই ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।