দিল্লির দুয়ারে পঙ্গপালের হানা

কথায় বলে, বিপদ যখন আসে চারদিক দিয়ে আসে। করোনার মোকাবিলায় রাজধানী দিল্লিতে যখন ত্রাহি ত্রাহি রব, ঠিক সেই সময় দোরগোড়ার হাজির মূর্তিমান আর এক বিপদ পঙ্গপাল। গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর লাগোয়া হরিয়ানার গুরুগ্রামে (আগের নাম গুরগাঁও) হানা দেওয়া পঙ্গপাল শনিবার সকাল থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আকাশ ছেয়ে ফেলে। ফসল ধ্বংসকারী পঙ্গপাল যেকোনো সময়ে দিল্লিতে হানা দিতে পারে বলে প্রশাসনের আশঙ্কা।

মাস দেড়েক আগে মহারাষ্ট্র, গুজরাট, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে পঙ্গপালের উপদ্রব শুরু। সেই থেকে ক্রমে ক্রমে তারা পাঞ্জাবের কিছু অংশ, উত্তর প্রদেশের পশ্চিম প্রান্ত হয়ে হরিয়ানায় আসে। দিন পনেরো আগে তাদের শক্তি অনেকটাই কমে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎই দিন কয়েক আগে তাদের শক্তি বৃদ্ধি ঘটে। শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা নাগাদ গুরুগ্রামের আকাশে তাদের আনাগোনা শুরু। শনিবার তা ঘন কালো মেঘের মতো আকাশ ছেয়ে ফেলে। জেলা প্রশাসন সবাইকে দরজা-জানলা বন্ধ রেখে শব্দ করে পঙ্গপাল তাড়ানোর পরামর্শ দেয়।

রাজধানীর উপকণ্ঠে গুরুগ্রাম উত্তর ভারতের ‘সাইবার হাব’ বলে পরিচিত। এই অত্যাধুনিক শহর ঘিরে রয়েছে বিস্তীর্ণ চাষের জমি। পঙ্গপালের হাত থেকে সেই জমির ফসল বাঁচানোই প্রশাসনের প্রথম চিন্তা। পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার সাইরেন ও হুটার বাজিয়ে পঙ্গপাল তাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। বহু মানুষকে দেখা যায় থালা-বাসন ও কাঁসর ঘণ্টা বাজিয়ে পঙ্গপাল তাড়ানোর চেষ্টা করতে। কিন্তু তাতে প্রকোপ বন্ধ হয়নি। সামাজিক মাধ্যমগুলো পঙ্গপালের ছবিতে সয়লাব।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, হরিয়ানা রাজ্য সরকার জেলা প্রশাসনকে পরিস্থিতির মোকাবিলায় সতর্ক করেছে। ফসল বাঁচাতে কীটনাশক ছড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য দমকল বিভাগকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। গুরুগ্রামের বাসিন্দা রীতা শর্মা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ আকাশ কালো হয়ে পঙ্গপালে ছেয়ে যায়। পুলিশ ও প্রশাসন দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখার নির্দেশ দেয়। থালা-বাসন, কাঁসর ঘণ্টা বাজতে থাকে। পুলিশ হুটার বাজাতে থাকে।’ দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই পঙ্গপালের মোকাবিলায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।

গুরুগ্রামের কাছেই দিল্লি বিমানবন্দর। পঙ্গপালের আক্রমণে বিমান ওঠানামায় যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।