পশ্চিমবঙ্গের দিঘার সৈকতে ভেসে এল ৪৫ ফুট দীর্ঘ মৃত তিমি

ভেসে আসা মৃত তিমি। ছবি: সংগৃহীত।
ভেসে আসা মৃত তিমি। ছবি: সংগৃহীত।

পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র দিঘার সাগরসৈকতে গতকাল সোমবার সকালে ভেসে আসে বিশাল এক মৃত তিমি। লম্বায় এটি ৪৫ ফুট, প্রস্থে ১০ ফুট। ওজন প্রায় ১৬ টন। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র দিঘার কাছে মন্দারমণি সৈকতে মিলেছে এই দৈত্যকার তিমি।

সৈকতে তিমি ভেসে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে মৃত তিমিটি দেখতে মানুষ ভিড় করে। সকালে ভাটার সময় তিমিটি ভাসমান অবস্থায় দেখা গেলেও কিছুক্ষণ পর আবার তা ভাটার টানে নেমে যায়। প্রথমে এলাকাবাসী মনে করেছিল, কোনো জেলের নৌকা উল্টে সাগরে ভাসছে। এরপর ফের দুপুরের দিকে জোয়ারের সময় চলে আসে তিমিটি। একপর্যায়ে মন্দারমণি সমুদ্রতটে আটকে পড়ে মৃত তিমিটি। তিমির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তিমিটি থেকে দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছিল।

এর আগে ২০১২ সালে দিঘার এই সৈকতে মিলেছিল আরেকটি বিশাল তিমি। এটি লম্বায় ছিল ৪২ ফুট। ওজন ১৮ টন। ওই মৃত তিমিটি দিঘার জেলেদের ট্রলারে আটকে পড়ে চলে এসেছিল বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী এই সমুদ্রসৈকতে। এটি ছিল ব্যালেন হোয়েল প্রজাতির তিমি। এবারের তিমিটি কোন প্রজাতির, এখনো তা জানা যায়নি। তবে মৃত তিমির ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ভারতের জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন, এই তিমিও ব্যালেন প্রজাতির।

দিঘায় তিমি আসার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বন দপ্তর ও দিঘা মেরিন অ্যাকুয়ারিয়াম অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের বিশেষজ্ঞরা। সন্ধ্যা নাগাদ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের পর সৈকতের কাছে গর্ত করে মৃত তিমিটিকে লবণ এবং ব্লিচিং পাউডার দিয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে এই তিমির কঙ্কাল জাদুঘরে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।

দিঘা মেরিন অ্যাকুয়ারিয়াম অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী এস বালকৃষ্ণন বলেছেন, ডিএনএ পরীক্ষার পর জানা যাবে, এটি কোন প্রজাতির তিমি। তবে ব্রাইড হোয়েল প্রজাতির তিমি প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরে দেখা যায়। বঙ্গোপসাগরে সাধারণত কোনো তিমির হদিস না মিললেও কোনো কারণে প্রজননের সময় বা খাবারের খোঁজে ঢুকে পড়তে পারে। তিনি এ কথাও বলেছেন, তবে জাহাজ বা এই ধরনের কোনো কিছুতে ধাক্কা লেগে এক সপ্তাহ আগে তিমিটির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।