পশ্চিমবঙ্গে গরিবের রেশন নিয়ে মোদি-মমতার পাল্টাপাল্টি ঘোষণা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রেশন-রাজনীতি’ শুরু হয়েছে। গরিবদের বিনা মূল্যে রেশনের চাল, গম ও ডাল দেওয়া নিয়ে এই রাজনীতি চলছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দেন, বিনা মূল্যে গরিবদের রেশন বিতরণের প্রকল্প আরও তিন মাস বাড়িয়ে আগামী নভেম্বর পর্যন্ত করা হলো।

অর্থাৎ, আরও তিন মাস ভারতের ৮০ কোটি মানুষকে দেওয়া হবে রেশনের চাল, গম ও ডাল। প্রত্যেকে মাসে পাঁচ কেজি চাল বা গম ও এক কেজি ডাল পাবেন বিনা মূল্যে।

এই তিন মাসে এ জন্য রেশন খরচ হবে ৯০ হাজার কোটি রুপি। এর আগে আগস্ট পর্যন্ত রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল।

মোদির ঘোষণার ঘণ্টাখানেক পর গতকাল বিকেলেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সচিবালয় নবান্নে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দেন, তিনি রেশন দেবেন আগামী বছরের জুন পর্যন্ত।

মোদি ও মমতার পাল্টাপাল্টি ঘোষণাকে ‘রেশন–রাজনীতি’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিহার বিধানসভার নির্বাচন। এই নির্বাচন ঘিরে নির্বাচনী তাস খেলছেন মোদি ও মমতা। তাঁরা শুরু করেছেন রেশন–রাজনীতি।

মমতার রেশন–রাজনীতিকে মেনে নিতে পারেননি পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীরা

রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে অনুকরণ করে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন রেশন দেওয়ার কর্মসূচি। কিন্তু আগামী জুন মাস পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন কি না, তারই তো ঠিক নেই।’

পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের পৌরমন্ত্রী ও কলকাতা পৌর করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বর্তমান প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘গোটা দেশে পশ্চিমবঙ্গ ব্যতিক্রম। সংকটের সময় এই রাজ্যে একজনকেও অভুক্ত রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভবিষ্যতেও রাখবেন না। আজ দিলীপ ঘোষের হিংসার রাজনীতি নয়; গোটা রাজ্যের মানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছে মমতার নাম।’

রাজ্য কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, ‘ঘোষণা–রাজনীতির প্রতিযোগিতায় নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের বড়, মেজ, ছোট নেতারা তো ত্রাণের অর্থ লুট করছে। তাই ভাষণে পেট ভরে না, মাথার ছাদ হয় না।’

সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সাবেক সাংসদ মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘সংকটের সময় খাদ্য সুরক্ষা আইনে খাদ্যের নিরাপত্তা পাওয়া মানুষের অধিকার। কেন্দ্রীয় সরকার আর রাজ্য সরকার এমন ভাব করছে, যেন অনুদান দেওয়া হচ্ছে। বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছেন মোদি-মমতা।’